তারেক থেকে কত খেয়েছেন, সোহাগকে ছাত্রলীগ নেতা

ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে কত টাকা খেয়েছেন তা সরাসরি তার কাছে জানতে চেয়েছেন সংগঠনটিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একটি হল কমিটির সাবেক এক নেতা।

কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং আগামী ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের আসন্ন সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর কেন্টিনে এক বৈঠকে এই বিব্রতকর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন সোহাগ।

সোহাগের কাছে সরাসরি প্রশ্ন রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোটা সংস্কার নিয়ে পোস্ট দিচ্ছে? আন্দোলন করছে? আপনি নিশ্চুপ কেন? তারেক রহমান আপনাকে কত টাকা দিয়েছে?’।

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমুক, এটা ছাত্রলীগ চায়নি। সংগঠনটির কোনো কোনো নেতা ব্যক্তিগতভাবে এই কোটা আন্দোলনে অংশ নিলেও সাংগঠনিকভাবে ছাত্রলীগ এই আন্দোলনের পক্ষে ছিল না। যদিও ১২ এপ্রিল সকালে পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে সব জানান সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। আর সেদিন সন্ধ্যায় সংসদে দেয়া বক্তব্য ‘কোনো কোটার দরকার নেই’ বলে তার অবস্থান জানান প্রধানমন্ত্রী।

এরপর ছাত্রলীগ আনন্দ মিছিল করলেও সংগঠনের নেতাকর্মীরা সামাজিকমাধ্যমে কোটা আন্দোলনের নেতাদের সমালোচনা করে নানা পোস্ট দিচ্ছেন। তবে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ এ বিষয়ে তেমন কিছুই লিখছেন না।

আর এই বিষয়টি নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতার প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি সোহাগ। তবে সমর্থকদের দিয়ে বুলবুলকে পিটুনি দিয়েছেন তিনি।

সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এই বৈঠক হয়।

কোটা সংস্কারের ইস্যু ছাড়াও ছাত্রলীগের আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাগর হোসেন, মিশু, মিশকাতসহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মী সোহাগের কাছে সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে জানতে চান। কিন্তু তাদের সঙ্গে কথা বলতে না চাইলে তারা সোহাগের দিকে তেড়ে আসেন এবং গালিগালাজ করেন।

এ সময় সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে সংগঠনটির সহ-সভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজনের এক প্রশ্নের জবাবেও ‘বাঁকা’ উত্তর দেন ছাত্রলীগ সভাপতি। বলেন, ‘সম্মেলনের একদিন আগে প্রস্তুতি কমিটি করা হবে।’

এসময় পাশে থাকা সোহাগের অর্ধ শতাধিক সমর্থক পিটুনি দিয়ে মধুর ক্যান্টিন থেকে বের করে দেয় সাগর হোসেন, মিশু, মিশকাত, আল আমিনসহ ছয়জনকে।

আহত পাঁচজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান কমিটি সম্মেলন পেছানোর জন্য হলের ছেলেমেয়েদের টাকা দিয়ে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে রাস্তায় নামাচ্ছেন। এছাড়া, তারা বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীদের কোটার বিরুদ্ধে ব্যানার, ফেস্টুনও লিখে দিয়েছেন আন্দোলন করার জন্য। এইসব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’

এসব বিষয় নিয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের কাছে জানতে গেলে তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি। দুইজনই বলেন, এটি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে কিছু বলতে চান না তারা।