তারেক-বাবরের আশ্বাসে ২১ আগস্ট হামলা চালায় জঙ্গিরা

হাওয়া ভবন থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাদের এ আশ্বাস দিয়েছিলেন মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু।

সোমবার ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সৈয়দ রেজানুর রহমান।

যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন,মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সমর্থন করে ১২ সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জবানবন্দিতে বলেন, জঙ্গি তৎপরতা চালাতে আওয়ামী লীগ তাদের বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা আব্দুস সালামের সরকারি বাসভবন ও হওয়া ভবনে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টু জঙ্গি নেতাদের প্রশাসনিক ও অর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং হামলার বিস্ফোরক সরবরাহের আশ্বাস দেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমানকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী একরামুদ্দিন।

আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর ২০ জনের সাফাই সাক্ষী নেয়া হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)। ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলা তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন।

অন্য মামলায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় পর এ মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পালাতক রয়েছেন। এ ছাড়া জামিনে আট এবং কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন।