তিন দিন সমুদ্রে ভাসার পর নৌ কমান্ডার উদ্ধার

দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ইয়ট ‘থুরিয়া’য় চেপে গোল্ডেন গ্লোব রেস-এ অংশ নিয়েছিলেন ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডার ৩৯ বছরের কীর্তিচক্র অভিলাষ টোমি। জুলাইয়ে ফ্রান্স থেকে শুরু হওয়া ৩০ হাজার মাইলের জলপথ অতিক্রম করার এই প্রতিযোগিতায় টোমিই ছিলেন ভারতের একমাত্র প্রতিনিধি।

অভিযানে অস্ট্রেলিয়ার পার্থের উপকূলের কাছে প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে তার বোট। ভেঙে যায় মাস্তুল। মেরুদণ্ডে গুরুতর চোট পান টোমি। কার্যত নড়াচড়ার ক্ষমতাও ছিল না। এর পর অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের কাছেই তার ইয়টের খোঁজ মেলে দু’দিন আগে।

তার পর থেকেই শুরু হয় উদ্ধারের তোড়জোড়। অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজ, হেলিকপ্টার, ভেসেল পাঠানো হয়। ভারতীয় নৌবাহিনীও উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে শুরু করে। সোমবার ফরাসি মাছধরার ভেসেল ‘ওসিরিস’ টোমিকে উদ্ধার করে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের কাছে ভারত মহাসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে টোমিকে। মাঝ সমুদ্রে ইয়ট ‘থিরুয়া’ থেকে তাকে তুলে ফরাসি মাছধরার একটি ভেসেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ইয়টটিও। টোমিকে উপকূলের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছে।

নৌসেনা সূত্র জানায়, ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে প্রবল ঝড়ে ধেয়ে আসে ১০-১২ ফুট উঁচু একের পর এক ঢেউ। এতে কার্যত খড়কুটোর মতো ভেসে বেড়ায় ইয়ট। এক সময় প্রবল ঝড়ে ভেঙে গেয় মাস্তুল।

এরই মধ্যে বিশালাকার এক ঢেউ এসে পুরো উল্টে দেয় টোমির ছোট্ট ইয়ট। পিঠে গুরুতর চোট পান তিনি। কার্যত নড়ার শক্তি নেই। শুধুই অপেক্ষা, কখন ঝড় থেমে যাবে, সমুদ্র আবার শান্ত হবে। স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন মেসেজে রিপ্লাই দিচ্ছেন খুব সামান্যই।

টানা প্রায় তিন দিন এভাবেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করে কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন কীর্তিচক্র অভিলাষ টোমি। ভারতীয় নৌবাহিনীতেও ফিরে স্বস্তি। খবর: আনন্দবাজার।