ত্রিদেশীয় সিরিজে ফিরলেন বিজয়, বাদ সৌম্য-তাসকিন

অবশেষে সব জ্বল্পনা-কল্পনা সত্য প্রমাণ করে সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস এবং পেসার তাসকিন আহমেদকে বাদ দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে জাতীয় দলের নির্বাচকরা। ঘোষিত এই দলে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন এবং পেসার আবুল হাসান রাজু।

ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের জন্য এই দল ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলা সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে মোট ৫ জনকে। নতুন করে দলে নেয়া হয়েছে ৫জনকে।

ইনজুরির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে পারেননি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ঘোষিত দলে রয়েছেন তিনি। বাদ পড়াদের দলে তাসকিন-সৌম্য ছাড়াও রয়েছেন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক, লিটন কুমার দাস এবং পেসার শফিউল ইসলাম।

পরিবর্তে যাদের নেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে বিজয়-মোস্তাফিজছাড়াও রয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন, পেসার আবুল হাসান রাজু এবং স্পিনার সানজামুল ইসলামকে। জাতীয় লিগে ডাবল সেঞ্চুরিছাড়াও বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে দারুণ ব্যাটিং করেছেন এনামুল হক বিজয়। তিনি করেছেন ২০৬ রান। সৌম্য সরকার যেহেতু দীর্ঘদিন রানে নেই, সে কারণেই বিজয়ের ওপর নজর পড়ে নির্বাচকদের।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলার ফল হিসেবেই জাতীয় দলে জায়গা পেয়ে গেলেন তিনি। যদিও প্রস্তুতি ম্যাচে বেশ হতাশাজনক ছিল বিজয়ের ব্যাটিং। তার তুলনায় অন্য ওপেনার সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস কিংবা ইমরুল কায়েসরা ছিলেন আরও নিষ্প্রভ। বিজয় তো যা ২১ রান করেছিলেন। অন্যরা বিশের কোটাও পার করতে পারনেনি।

বিজয়ের দলে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে তাই দল ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘এনামুল হকের কথা বলতে পারি। যথেষ্ট ভালো খেলেই সুযোগ করে নিয়েছে। দুই বছর ধরেই পারফরম্যান্স করছে। আশা করি সে এখানে ভালো করতে পারবে।’

সৌম্যকে বাদ দেয়া নয়, ব্রেক দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক। তার মতে, সৌম্য যেহেতু পুলভুক্ত খেলোয়াড়। দ্রুত ফর্মে ফিরে আসতে পারবেন তিনি। প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সৌম্য সব ফরম্যাটেই কিছুদিন ধরে খেলে যাচ্ছে। ওর প্রতিভা নিয়ে কোন রকম প্রশ্ন নেই। যেহেতু একটু ধারাবাহিকতার মধ্যে নেই, এ জন্য আমরা একটু ব্রেক দিয়েছি। সৌম্য আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই আছে। যেহেতু আমাদের পুলভুক্ত খেলোয়াড়। আমরা আশা করি ও আবার ফর্মে ফিরে আসবে।’

তাসকিন আহমেদকে বসিয়ে আবুল হাসান রাজুকে দলে নেয়ারও বেশ কারণ আছে। বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে দারুণ ব্যাটিং এবং লেট অর্ডারে ভালো ব্যাটিং করেছেন। এ কারণে নির্বাচকদের নজর পড়েছে তার ওপর। প্রস্তুতি ম্যাচে এসে নিজের অপরিহার্যতা আরও প্রমাণ করলেন তিনি। ১৯ বলে খেললেন ৩৫ রানের ঝড়ো ইনিংস। এ কারণেই ১৬ সদস্যের দলে রয়েছেন তিনি।

২০১২ সালে অভিষেক হওয়ার পর ২০১৫ পর্যন্ত খেললেও ছিলেন অনিয়মিত। খেলেছেন মোটে ৬টি ওয়ানডে। তবে ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলার পরই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। এরপর আর ফিরতে পারছিলেন না। অবশেষে তিন বছরের অপেক্ষার অবসান হলো তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে আবারও দলে সুযোগ পেলেন তিনি।

প্রথম দুই ম্যাচের ১৬ সদস্যের দল
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, এনামুল বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মেহেদি মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবুল হাসান রাজু, সাইফউদ্দীন, সানজামুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মিঠুন।