দায়িত্ব না নিলেও নূরুল হকই থাকবেন ডাকসু ভিপি

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। তবে পুনর্নির্বাচন দাবিতে ক্যাম্পাসে এখনও আন্দোলন চলছে।

এরই মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নবনির্বাচিত ভিপি মো. নূরুল হক নূর শেষ মুহূর্তে দায়িত্ব না নিলে সংসদ কিভাবে চলবে। তিনি ভিপি পদে থাকবেন কিনা এমন প্রশ্নও তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীসহ অনেকের মনে।

জানা গেছে, ডাকসুর গঠনতন্ত্রে শপথ বলে কোনো ধারা উল্লেখ নেই। হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদ নেতাদের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। সে হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বা সংসদের কোনো বৈঠকে না গেলেও নূরুল হক নূরুই থাকবেন ডাকসুর ভিপি।

এ প্রসঙ্গে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ডাকসু নেতাদের শপথের কথা কোথাও লেখা নেই। দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়।

ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার সময় কোনো শপথ নেয়ার মতো কিছু হয়নি। দায়িত্ব হস্তান্তর বলেও কিছু হয়নি। আমরা বড় করে অভিষেক অনুষ্ঠান করেছিলাম। সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।

ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র দুটি খণ্ডে বিভক্ত। যেখানে কেন্দ্রীয় সংসদ অংশে নির্বাহী কমিটি, কার্যালয় বণ্টন, সংসদের তহবিল, শূন্যপদ পূরণ, গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ ১৬টি বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

অন্যদিকে দ্বিতীয় খণ্ডে হল সংসদের নিয়মাবলি, কার্যক্রমসহ তেরোটি বিষয় রয়েছে। সেখানকার কোথাও ডাকসু নেতাদের কোনো ধরনের শপথ অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ নেই।

হল সংসদের ৭২নং ধারায় অভিষেক অনুষ্ঠানের কথা লেখা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, নির্বাহী কমিটি একটি ব্যয়ের বাজেট প্রস্তুত করবে এবং অভিষেক অনুষ্ঠানের ১৪ দিনের মধ্যে তা সংসদে উপস্থাপন করবে।

ডাকসুর সাবেক নেতারা বলছেন, ডাকসু নির্বাচনের পর নতুন নেতৃত্বের শপথ গ্রহণের মতো কোনো কিছু আগে হয়নি। শপথ গ্রহণ করার কোনো অনুষ্ঠানও হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠান আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট বিজয়ী নেতৃত্ব।

তবে প্রশ্ন রয়েছে, নতুন ভিপি দায়িত্ব না নিলে সংসদ কিভাবে চলবে। এ বিষয়ে সাবেক নেতারা বলেন, এমন কোনো ঘটনা অতীতে ঘটেনি। ভিপি দায়িত্ব না নিলে সংসদ কিভাবে চলবে সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কারণ তিনি ডাকসুর সভাপতি। নির্বাচন নিয়ে কোনো সমস্যা থাকলে তা গঠনতন্ত্রের নিয়মে তিন দিনের মধ্যে উপাচার্যকে নিষ্পত্তি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে না হলে উপাচার্যের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।-যুগান্তরের সৌজন্যে।