দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে নাইকো মামলা, কেন খালাস পেলেন শেখ হাসিনা?

১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে নাইকোর সঙ্গে দরকষাকষি করলেও দেশের স্বার্থ বিরোধী শর্ত থাকায় কোন চুক্তি করেনি শেখ হাসিনা সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সে সময় শর্তাবলী সরকারের অনুকূলে না থাকায় চুক্তি হয়নি। পরে সে চুক্তি হয় ২০০৩ সালে। এতে যে দুর্নীতি হয়েছে পরবর্তীতে কানাডার আদালতেও তা প্রমাণ হয়। এ কারণে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই নেত্রীর নামে মামলা করলেও উচ্চ আদালত খালাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

বাংলাদেশের তিনটি গ্যাস ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নাইকোর সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু দরকষাকষির এ পর্যায়ে নাইকোর একটি শর্ত বাংলাদেশ বিরোধী হওয়ায় তখন তাদের সঙ্গে আর কোনো চুক্তি করেনি শেখ হাসিনা সরকার।

পরে ক্ষমতার পালাবদলে ২০০১ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট। ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর নাইকোর সব শর্ত মেনে তাদের সঙ্গে চুক্তি করে বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। নাইকো-বাপেক্স জেভিএ বা যৌথ চুক্তি সই হয়। এসময় আইনমন্ত্রী এবং নিজের আইন পেশার প্রতিষ্ঠান দুই জায়গা থেকেই বিশেষজ্ঞ মতামত দেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

পরবর্তীতে কানাডার আদালতে প্রমাণ হয় নাইকো বেগম জিয়ার সরকারকে ঘুষ দিয়ে কাজ বাগিয়ে নেয়। হাওয়া ভবনে বসে ঘুষের টাকা নেন বিএনপি সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। সে সময়কার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ১ লাখ ৯০ হাজার কানাডীয় ডলারের গাড়ি ও বিদেশ সফরের জন্য পাঁচ হাজার ডলার ঘুষ দেয়ার অভিযোগ উঠে নাইকোর বিরুদ্ধে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুদকের কাছে সে গাড়ি ফেরতও দেন একেএম মোশাররফ। এসব প্রেক্ষাপটে কানাডার আদালত- নাইকো কাজ পেতে বেগম জিয়ার সরকারকে ঘুষ দিয়েছিলো বলে রায় দেন।

এক এগারোর সরকার একই অভিযোগে বেগম জিয়া ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করলেও পরে উচ্চ আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। আদালতের আদেশে বলা হয় শেখ হাসিনা সরকার নাইকোর সঙ্গে দরকষাকষি করলেও দেশের স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় কোনো চুক্তি করেনি। তাই এ মামলা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়।