দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্তরা ভোটে অযোগ্য : হাইকোর্ট

বিচারিক (নিম্ন) আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে আপিলে বিচারাধীন অবস্থায় কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অবশ্য দণ্ড স্থগিত হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

দুর্নীতির দায়ে বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আমান উল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন খারিজের আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন আদালত। এর ফলে আমানসহ ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, আব্দুল ওহাব ও মশিউর রহমান আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমানের পক্ষে আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করীম ও খায়রুল আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ওয়াদুদ ভূঁইয়া ও আব্দুল ওহাবের পক্ষে ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম এবং মশিউর রহমানের পক্ষে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক উপস্থিত ছিলেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার (২৬ নভেম্বর) এ পাঁচজনের দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। পরে আজ (মঙ্গলবার) তাদের আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘পাঁচজনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ক্ষেত্রে আদালত সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হলে আপিল বিভাগে তা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানই এখানে প্রাধান্য পাবে।’

বিএনপির পাঁচ নেতার দুর্নীতির পৃথক মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে করা পৃথক আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের পাশাপাশি কিছু অভিমত দেন আদালত।

আদেশের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, দুই বছরের বেশি সাজা হলে সাজা মাথায় নিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে আদালত অভিমত দিয়েছেন। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন, আবেদনকারী জামিনে আছেন, জরিমানার আদেশ স্থগিত হয়েছে -এসব দণ্ড বা সাজা স্থগিতের যুক্তি হতে পারে না বলে জানিয়েছেন আদালত। সংবিধান সর্বোচ্চ আইন। দণ্ডিত সাজাপ্রাপ্তদের নির্বাচন করার বিষয়ে সংবিধানের ৬৬ (২)(ঘ) অনুচ্ছেদে বাধা আছে।

বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেনের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুসারে দণ্ড স্থগিতের সুযোগ নেই বলেছেন আদালত। দণ্ড ও সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আদালতে কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তির করা আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ওই ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলেও বলেছেন আদালত।