দুদকে ৭৩ শতাংশ অভিযোগের বিচার হয় না

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ৭৩ শতাংশ অভিযোগের সমাধান হয় না। ২৭ শতাংশ অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ নেয়া হলেও পরবর্তী কার্যকর পদক্ষেপ ইতিবাচক হচ্ছে না। নানাভাবে হয়রানির কারণে ৬ শতাংশ অভিযোগ উত্থাপন করা সম্ভব হয় না বলে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রোবাবার রাজধানীর মাইডাস ভবনে টিআইবি আয়োজিত দুর্নীতি প্রতিরোধে ‘দুদক পরিচালিত গণশুনানি : কার্যকারিতা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন টিআইবির গবেষক মো. ওয়াহিদ আলম, মো. রেজাউল করিম ও মো. শহিদুল ইসলাম।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত দুদক বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গৃহীত মোট ৩৫টি গণশুনানির আয়োজন করে। এসব গণশুনানির ফলে সমস্যা সমাধান, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও পরবর্তী পরিস্থিতির উপর টিআইবি গবেষণা চালায়। গবেষণার মেয়াদকাল উল্লেখ করা হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদকের গণশুনানিতে ৭৮ শতাংশ অভিযোগ সমাধানে প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে। ২২ অভিযোগ আমলে নেয়া হচ্ছে না। আমলে নেয়া অভিযোগের মধ্যে ৭৩ শতাংশ সমাধান হচ্ছে না। ২৭ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয় না। তার মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত অভিযোগ অতিমাত্রায়। ভূমি সেবা সংশ্লিষ্ট অভিযোগ ৬৭ শতাংশ আর সেবা বিষয়ক অভিযোগ ৩৩ শতাংশ রয়েছে।

২৭ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হলেও এটি ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের গণশুনানির ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এক ধরনের জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মানুষের মধ্যে কিছুটা আস্থা তৈরি হচ্ছে।

তিনি বলেন, গণশুনানিতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে রায় আসলেও দুদকের পরবর্তী মনিটরিং না থাকায় তা চাপা পড়ে যাচ্ছে। এতে অভিযোগকারীর দুদকের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে।

যারা গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করছেন তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ প্রক্রিয়া দুদকের একটি হাতিয়ার হলেও অনেক সময় দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রভাবিত হয়ে রায় দিচ্ছেন। এতে করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।

এ সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।