দুর্ঘটনার শিকার জনির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে ‘ঈগল’

বিধান মুখার্জী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী এ আর জনি আহমেদ তার মা-বাবা, বোনসহ একই পরিবারের ৪ জন সদস্যের সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হবার ঘটনায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে রাজি হয়েছে দুর্ঘটনার ঘাতক বাস (ঢাকা মেট্রোঃ ১৫-০৭০২) ঈগল পরিবহনের মালিকপক্ষ।

শনিবার ১ জুলাই সকাল নয়টার দিকে গোলড়া হাইওয়ে থানার আওতাভুক্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গত ১ জুলাই গণবি শিক্ষার্থী এ আর জনি আহমেদ মানিকগঞ্জ থেকে মা, বাবা, ও বোনসহ প্রাইভেটকারে সাভারে ফেরার পথে ঈগল পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে সপরিবারে গুরুতর আহত হন এবং পরে তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং প্রাইভেট কারের চালক এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার শিকার জনির বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ পেলেও জনিসহ তার বোন ও মা আইসিইউতে চিকিৎসারত আছেন।

আইসিইউতে চিকিৎসার জন্য জনি ও তার পরিবারের মোট তিন সদস্যের প্রতিদিন প্রায় দেড়লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। জনির পরিবারের সকলেই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে আত্মীয়স্বজন ও তার বন্ধু বান্ধব। অর্থের অভাবে মাঝেমাঝেই থমকে যাচ্ছে নিয়মিত ওষুধপত্রের যোগান। দুর্ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় নয় লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে।

জনির জীবন বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে তার সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষী সকলেই।দুর্ঘটনার পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৪ জুলাই) পর্যন্ত ঘাতক ঈগল পরিবহনের মালিকপক্ষ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জারত জনি ও তার পরিবারের কোন খোঁজখবর করেনি এই অভিযোগে এবং চিকিৎসা ব্যয় বহন করে জনি ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর দাবিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাইশমাইল থেকে ঈগল পরিবহনের পাঁচটি বাস আটক করে।

এরপর আশুলিয়া থানা পুলিশ, সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের আলোচনার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ বুধবার বিকাল ৫ টায় আশুলিয়া থানায় আশুলিয়া থানা ওসি, সাভার হাইওয়ে থানা ওসি, গোলড়া থানার ওসি এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ দেলোয়ার হোসেন এবং শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের আলোচনায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে জনি ও জনির পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন ঈগল পরিবহণের মালিক পবিত্র চন্দ্র কাপুরিয়ার ভাই বিপ্লব চন্দ্র কাপুরিয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কৌশিক আহমেদ বলেন, ‘ জনি ভাইয়ের চিকিৎসা যাতে কোন ভাবেই বাধাগ্রস্থ না হয় সেই দাবি থেকেই আজ মালিক পক্ষ পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে। চিকিৎসা ব্যয়ের তুলনায় এই ক্ষতিপূরণ কম হলেও টাকার জন্য আমাদের একজন শিক্ষার্থীর চিকিৎসা বন্ধ থাকবে না। আমরা তার সহপাঠী, বন্ধুবান্ধব ও ছোট ভাইবোনেরা একসাথে চেষ্টা করব’। এছাড়াও চিকিৎসারত জনি ও তার পরিবারের সাহায্যে আগ্রহীরা (০১৭২৫-৩৭৫৭৬৪) এবং (০১৭৯৪-৩২০২৮৭) এই দুটি নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পাঠাতে পারেন বলেও জানান তিনি।

তবে এই আলোচনায় একই দুর্ঘটনায় নিহত প্রাইভেটকারের চালকের ব্যাপারে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।