দেবতার সঙ্গে বিয়ের নামে মন্দিরেই নাবালিকাদের…

তারা কেউ প্রাপ্ত বয়স্ক নয়। নিজেরা হয়তো ভাল করে জানেও না, কেন দেবতাদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। অথচ তা হচ্ছে। এবং তারপর ছেলেরাই এসে দেবতাদের সামনে পোশাক খোলাচ্ছে তাদের।

এমন খবর ছড়াতেই শোরগোল পড়েছে ভারতে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সকলের সামনেই দেশে রমরমিয়ে চলছে দেবদাসী প্রথা? দেবতার উদ্দেশ্যে নিজেকে সঁপে দিতে চান বহু নারী। যেন দেবতার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ।

এই ভাবনা থেকেই দেবদাসী প্রথার শুরু। কিন্তু কালে কালে সেখানে এসে বাসা বাধে শারিরীক হেনস্তা। প্রথা ও ধর্মের ভয় দেখিয়ে নারীদের বাধ্য করা হয় দেবতাদের বিয়ে করতে। তারপর সেই ভুয়ো বিয়েকে সামনে রেখে চলে বিতর্কীত মহোউৎসব।

এই ঘৃণ্য প্রথার বিরুদ্ধে বহু আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনা জানাচ্ছে, দক্ষিণ ভারতের বহু মন্দিরে এখনও এই প্রথা রমরমিয়ে চলছে। জানা যাচ্ছে, তামিলনাড়ুর এক মন্দিরে পাঁচটি অল্পবয়সি মেয়েকে এভাবে দেবতার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরে প্রথার দোহাই দিয়ে, পাঁচজন বালক এসে পোশাক খুলেছে ওই বালিকাদের। কর্নাটকেও একইরকম ঘটনার ঘটেছে বলেই বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র জানিয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে।

নারীদের নিয়ে কাজ করা এই সংস্থার অভিযোগ জানানো হয়েছে জাতীয় মানবধিকার কমিশনে। মিডিয়া রিপোর্ট ও এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে কমিশন।

দেবদাসী প্রথার বৈধতা নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে ভারতে। তবে সেব ছাপিয়ে যে এখনও এই প্রথা বেশ সক্রিয়, তারই প্রমাণ মিলছে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে। ২০০৬ সালে জাতীয় মহিলা কমিশন কয়েক হাজার নারীর খোঁজ পায়, যারা দেবদাসী প্রথার বলি। যদিও দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে এই প্রথা নিষিদ্ধ।

কর্নাটকে রীতিমতো আইন করে দেবাদাসী প্রথা বন্ধ করা হয়েছিল, প্রায় তিন দশক আগে। দেবদাসীদের বিবাহেরও অধিকার দেওয়া হয়েছিল। যদিও আইন থাকা সত্ত্বেও এই কাজ চলছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ সামনে আসার পর বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তদন্তে নেমেছে।

কোনও কোনও মহলের বক্তব্য, হয়তো দেবদাসী প্রথা নয়। স্থানীয় মন্দিরগুলিতে ধর্মীয় প্রথার নামে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চলে। তাকেই দেবদাসী প্রথা বলে ভুল করা হচ্ছে। তবে বালিকাদের পোশাকহীন করার যে অভিযোগ এসেছে তা গুরুত্বের সঙ্গেই বিচার করছে কমিশন। -সংবাদ প্রতিদিন