‘দেশ ঠিকভাবে চলছে না, বলার সাহস নেই কারও’

দেশে বেকার সমস্যা, মাদকের ছোবলে তরুণ সমাজ, খাবারে ভেজালের কথা জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘মাননীয় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার যখন রাস্তা দিয়ে যান, তখন রাস্তা বন্ধ থাকে। উনি জানেন না, রাস্তা বন্ধ থাকার জন্য মানুষের কত দুর্ভোগ হয়। সেই যানজট ছাড়তে ছাড়তে রাত হয়ে যায়। কিন্তু যানজট ছাড়ে না। আর রাস্তাঘাট, অতিবৃষ্টির কারণে সব নষ্ট হয়ে গেছে।’

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২১তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন। পরে তার এই বক্তব্যের জবাবও দেন শেখ হাসিনা।

দেশ ঠিকভাবে চলছে না উল্লেখ করে সংসদে উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে রওশন বলেন, এখানে যারা বসে আছেন, তারা সবই জানেন। কিন্তু কেউ বলেন না সাহস করে। কারও সাহস নেই বলার।

এরপর এমপিদের প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনারা বলেন না কেন? সড়কপরিবহনমন্ত্রী আজ সংসদে নেই। কিন্তু যানজটের কারণে সব বন্ধ থাকে। দেশের রাস্তাগুলোর কোনোটাতেই চলা যায় না।’

বিরোধীদলীয় এই নেতা বলেন, নদী থেকে অবাধে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা হচ্ছে। জমি থেকে পলি মাটি তুলে ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে।কয়দিন পর এসব জমিতে ফসল ফলবে না। এসব করছে প্রভাবশালীরা।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এগুলো দেখার কেউ নাই নাকি? আপনাদের সরকার থেকে এসব দেখার কেউ নেই। আমি যে কথাগুলো বলছি, আপনারা তা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন, আমি কী কথা বলছি।

রওশন এরশাদ বলেন, গত নির্বাচনে ঝুঁকি নিয়ে আমরা অংশগ্রহণ করি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে এসব দেখতে হবে।

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ এত বেশি যে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। তারপরও থাকে বেশি ভিড়। চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যাও অনেক কম থাকে। ধনীরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে সেটিসফাইড (সন্তুষ্ট) হয়ে ফিরে আসছে।

দেশে শিক্ষার মান কমে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, বাজেটে শিক্ষাখাতে বেশি বরাদ্দ দেয়া উচিত ছিল।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে রওশন বলেন, কোটা নিয়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অনেক বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে। কোটা নিয়ে আন্দোলন করছে। তারা তো আমাদের সন্তান। তারা তো আবদার করবেই। তারা তো চাকরি চাইবে। তাদের চাকরিতে যেমন করে হোক প্রোভাইড করতে হবে। চাকরি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সচেতন আছেন, চেষ্টা করছেন। মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, তিনি যেন সহানুভূতির দৃষ্টি নিয়ে এই বিষয়টি বিবেচনা করেন।