দোহারে বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা

ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের বিএনপির প্রার্থী খোন্দকার আবু আশফাকের নির্বাচনী প্রচারণায় বেধরক লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে বিএনপির অন্তত ১০ নেতাকর্মী-সমর্থক আহত হয়েছে। মিছিল থেকে বিএনপির প্রার্থী খোন্দকার আবু আশফাক, দোহার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মেছেরসহ আটজনকে আটক করে দোহার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

বুধবার বিকেলে দোহার উপজেলার লটাখোলা করম আলী মোড় থেকে ধানের শীষের প্রতীকের মিছিল বের হলে এ ঘটনা ঘটে।

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে আবু আশফাককে থানায় আনা হয়েছিল। পরে তাঁকে রাত ৯টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নাশকতায় জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্যমতে, বিকেলে দোহার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের বিএনপির প্রার্থী খোন্দকার আবু আশফাক। প্রচারণাকে কেন্দ্র করে দোহারের লটাখোলা করম আলীর মোড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে সমবেত হন নেতা-কর্মীরা। পরে করম আলীর মোড় থেকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে একটি বড় মিছিল বের হয়ে উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়া বাজারসহ প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি ছিল।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, মিছিল শেষে নেতাকর্মীরা ফেরার পথে হঠাৎ করে পেছন থেকে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। পরে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন নেতাকর্মীরা। এরপর দোহার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রার্থী আবু আশফাকসহ আটজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আটকের ঘটনায় উত্তেজিত জনতা দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে।

দোহার থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন দাবি করেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছে।

এ বিষয়ে বিএনপির নেতা কালাম খন্দকার বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের নেতা খোন্দকার আবু আশফাকসহ ৩০-৩৫ জন নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।’

কালাম খন্দকার আরো বলেন, এক মাস যাবৎ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজার-হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দোহার-নবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক করছেন। তাতে পুলিশের কোনো সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু আজ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ আওয়ামী লীগকে সাথে নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে আহত করে থানায় নিয়ে গেছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ হয়ে কাজ করছে।

এদিকে সন্ধ্যার দিকে দোহারে মিছিল বের করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দাবি করেন, লটাখোলা করম আলী মোড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নৌকার প্রার্থীর পক্ষে থাকা দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা আমাদের দুই কর্মীর মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’