দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও হজযাত্রীদের সুবিধা কী?

কয়েক সপ্তাহ পর হজযাত্রীদের জন্য হজ প্যাকেজ ২০১৮ ঘোষণা করা হবে। হজ প্যাকেজের মধ্যে বড় কয়েকটি খাত হলো উড়োজাহাজের ভাড়া, মক্কা-মদিনার বাড়িভাড়া, সৌদি আরবে প্রদেয় সার্ভিস চার্জ, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ ও খাওয়ার খরচ।

ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা সরাসরি বিমানভাড়া ৬৫ হাজার ৬৯৩ টাকা। বাংলাদেশ বিমানের ওয়েবসাইটে ১২ জুলাই ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে জেদ্দা থেকে ২০ আগস্ট ঢাকায় ফিরতি বিমানভাড়া এটা। ওই সময়ে হজযাত্রী হজ ভিসা নিয়ে হজ পালন করতে যাবেন। তাঁকে দ্বিগুণ টাকায় বিমানের টিকিট কিনতে হবে। একই বিমানে পাশের আসনে বসা সাধারণ যাত্রীর তুলনায় হজযাত্রী ৬৫ হাজার টাকা বেশি দিচ্ছেন। তাহলে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইনসকে বছরে ৭০০ কোটি টাকা বেশি দিচ্ছেন। প্রশ্ন হলো দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও হজযাত্রীরা বাড়তি কী কী সুবিধা পাচ্ছেন? গত বছর হজ প্যাকেজে বিমানভাড়া ধরা হয় ১ লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। কারণ হজ ফ্লাইটে খরচ বেশি।

বেশ কয়েক বছর হজ পালন করেছেন ঢাকার কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা আতাউর রহমান। আতাউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান। হজযাত্রীদের বাড়তি অর্থে যদি বিমান সচল হয়, তাহলে বিমানকে যদি টাকা দিতেই হয়, তা আলাদা চার্জ হিসেবেও দেওয়া যায়। কিন্তু সমস্যা হলো এই টাকা তো বিমান পুরোটা একা পায় না। অর্ধেক পায় বিমান এয়ারলাইনস, বাকি অর্ধেক চলে যায় সৌদিয়া এয়ারলাইনসে। এই বাড়তি অর্থবছরের পর বছর আমরা সৌদি আরবকে (সৌদিয়া এয়ারলাইনসে) দিয়ে দিচ্ছি, হজযাত্রীরা বাড়তি কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না, সরকার বিষয়টি ভাবতে পারে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজি কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাসের বললেন, ওমরাহসহ সারা বছরই বিমানভাড়া ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। শুধু হজের সময় দ্বিগুণ হয়ে যায়। যৌক্তিকভাবে হজ প্যাকেজে বিমানভাড়া নির্ধারণ করা হলে হজযাত্রীদের ওপর বাড়তি টাকার চাপ কমে যাবে।

কয়েক বছরের হজ প্যাকেজের বিমানভাড়া খাতটিতে দেখা যায় ২০০৮ সালে বিমানভাড়া ছিল ৯৮ হাজার ৯৭০ টাকা, ২০০৯ সালে বিমানভাড়া ছিল ৯২ হাজার ২৭০ টাকা, ২০১০ সালে ছিল ৯৬ হাজার ৪২৫ টাকা, ২০১১ সালে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৫০ টাকা, ২০১২ সালে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ টাকা, ২০১৩ সালে ১ লাখ ২২ হাজার ২৩ টাকা, ২০১৪ সালে ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, ২০১৫ সালে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৮৭ টাকা, ২০১৬ সালে ১ লাখ ২২ হাজার ৬৬৫ টাকা এবং ২০১৭ সালে বিমানভাড়া ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা। এই ভাড়ার মধ্যে বিমানভাড়া (নিট), জেদ্দা ডিপারচার ট্যাক্স, হজ টার্মিনাল সার্ভিস চার্জ, এম্বারকেশন ফি, এম্বারকেশন ফির ওপর ভ্যাট, এক্সাইজ ডিউটি, সৌদি সরকারের সিকিউরিটি চার্জ, ট্রাভেল এজেন্ট কমিশন, বিমানভাড়ার ওপর উৎসে কর ফুয়েল সারচার্জ, ইনস্যুরেন্স সারচার্জ অন্তর্ভুক্ত।

হজ প্যাকেজে অন্যান্য খরচের মধ্যে রয়েছে সিটি চেক ইন চার্জ, জমজম পানি, ট্রেন ভাড়া, ব্যাংক গ্যারান্টি (হজ মন্ত্রণালয়), ব্যাংক গ্যারান্টি (জেনারেল কার সিন্ডিকেট), স্থানীয় সার্ভিস চার্জ আপৎকালীন ফান্ড, প্রশিক্ষণ ফি ইত্যাদি।