দ্রুতগতিতে বাড়ছে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়

এক ব্রিটিশ থিংক ট্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বার্ষিক আয় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। সোমবার দ্য রেজুলেশন ফাউন্ডেশন থিংক ট্যাংক ‘লিভিং স্ট্যান্ডার্ডস বাই এথনিসিটি’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০১-০৩ সাল থেকে ২০১৪-১৬ সালে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি পরিবারগুলোর বার্ষিক আয় বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। একই সময়ে পাকিস্তানি পরিবারগুলোর আয় বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

দ্য রেজুলেশন ফাউন্ডেশন-এর প্রতিবেদনে ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের সাপেক্ষে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মালিকানায় থাকা বাড়ির তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা গেছে ৫০ শতাংশেরও বেশি শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশের নিজেদের বাড়ি রয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশি, কৃষ্ণাঙ্গ ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বাড়ির পরিমাণ মাত্র এক-চতুর্থাংশ। বাড়ির মূল্য বিবেচনায় নিয়ে ওই থিংক ট্যাংক দেখিয়েছে, ব্রিটিশ পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশি পরিবারের আয়ের ব্যবধান ৯ হাজার ৮০০ পাউন্ড। শতকরা হিসেবে যা ৪৪ শতাংশ।

দ্য রেজুলেশন ফাউন্ডেশন বলছে, গত কয়েক বছরে এই ব্যবধান অনেক কমে আসতে শুরু করেছে। এই সময়ে ব্রিটিশ পরিবারের তুলনায় বাংলাদেশিদের আয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধিও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, শ্বেতাঙ্গ নারীদের কর্মসংস্থানের হার ৭২ শতাংশ, বাংলাদেশি নারীদের ৩৫ শতাংশ এবং পাকিস্তানি নারীদের ৩৭ শতাংশ। ১৪ বছর আগের তুলনায় নারীদের কর্মসংস্থানের হার অনেক বেশি। ওই সময় বাংলাদেশি নারীদের কর্মসংস্থানের হার ছিল ১৭ এবং পাকিস্তানের ছিল ২৭ শতাংশ।

রেজুলেশন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও গবেষণা দলের প্রধান অ্যাডাম কর্লেট বলেন, ‘বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও পুরুষের কর্মসংস্থানে আয় বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের অনুপ্রাণিত করার মতো। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নতুন শতাব্দীতে বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি পরিবারগুলো আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল। এজন্য কর্মসংস্থানসহ ভূমিকা রাখা ক্ষেত্রগুলোকে স্বাগত জানাই।’

গবেষণায় উঠে এসেছে, ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর পরিবারগুলো বছরে ৮ হাজার ৯০০ পাউন্ড স্টার্লিং কম আয় করে। ব্রিটেনে বসবাসরত সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর জীবনে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনের উপসংহার টানা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘এসব সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলো এখনও নিম্ন আয়ের মানুষ। কিন্তু ২০০১-০৩ সালের পর থেকে এসব গোষ্ঠীর অর্থনৈতিক আয় অনেক বেড়েছে। উচ্চ ও নিম্ন আয়ের ব্যবধান কমেছে।’

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, উল্লেখযোগ্য হারে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও কৃষ্ণাঙ্গদের আয় বেড়েছে। ২০০১-০৩ সালের তুলনায় তাদের আয় বৃদ্ধি যথাক্রমে ১৭, ১০ ও ৭ শতাংশ ছিল। যদিও শ্বেতাঙ্গদের আয় খুব বেশি পাল্টায়নি।