‘ধর্ষক’ ইভানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

রাজধানীর বনানীতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে ফের এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ‘ধর্ষক’ ইভান। ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরী বুধবার এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে দুপুর ২টায় বননী থানার এসআই সুলতানা আক্তার আদালতে ইভানকে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানান। শুক্রবার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

নারী ও শিশু আদালতের জিআরও আব্দুল মান্নান জানান, জবানবন্দি শেষে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হবে।

মামলার এজাহারে এক তরুণী উল্লেখ করেন, ১১ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইভানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। এর সূত্র ধরেই তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হতো এবং ঘোরাঘুরি করতেন।

চার মাস আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনার দিন রাত ৯টায় ইভান ফোন করে ওই তরুণীকে জন্মদিনের কথা বলে তার বাসায় যেতে বলে এবং বলে, তার মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে।

এজাহারে তরুণী উল্লেখ করেন, আমাদের সম্পর্কের বিষয়টি তার (ইভান) মাকে জানাবে বলে জানায় এবং টেলিফোনে তার মায়ের পরিচয় দিয়ে একজন মহিলা আমার সঙ্গে কথা বলে আর আমি তাকে তার মা মনে করি। তারপর আমি আমার আপুর সঙ্গে কথা বলে রাত সাড়ে ১০টায় রিকশায় করে তার বাসার সামনে পৌঁছালে সে আমাকে রিসিভ করে বাসায় নিয়ে যায়।

ওই তরুণী বাসায় গিয়ে আর কাউকে দেখেননি। জানতে চাইলে ইভান জানান, তার বাবা-মা অসুস্থ। তাই ঘুমিয়ে আছেন। জোরে কথা বলা যাবে না।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, বাসায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কোনো আলামত দেখি না। আমি ভয় পাই এবং বাসায় আসতে চাই। কিন্তু সে বাসায় আসতে দেয় না। সে আমাকে রাতে খাবার খাওয়ায় এবং নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। আমি তাকে নিষেধ করলে সে একদিন খেলে কিছু হবে না মর্মে জানায়।

এরপর রাত দেড়টায় ইভান তাকে ধর্ষণ করে বলে তরুণী এজাহারে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমি চিৎকার করতে থাকলে সে রাত সাড়ে ৩টায় আমার ব্যাগ রেখে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।’

তরুণীর ভাষ্য, ‘ব্যাগে তিনটা ড্রেস- ২টা জিনস, একটা কুর্তা, ৩টি মোবাইল, চার্জার, সিম কার্ড, মেমোরি কার্ড ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিল।’

বাসা থেকে রাতে বের করে দেওয়ার পর পথচারী ভদ্রলোকের সহায়তায় তিনি থানায় আসেন বলেও উল্লেখ করেন বাদী।
এজাহারে তরুণী আরো বলেন, ‘আসামি আমাকে এর আগেও বিবাহের প্রলোভনে ধর্ষণ করে। আমাকে ভয় দেখায়, মুখ খুললে তার কাছে থাকা খারাপ ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে।’

কিছুটা সুস্থ হয়ে এবং আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এজাহার দিতে দেরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন এ তরুণী।
এর আগে ২৮ মার্চ রাতে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়।