নওয়াজ শরীফের আকস্মিক কারামুক্তির নেপথ্যে কী?

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের ১০ বছরের সাজা হয়েছিল। আর বাবার বিরুদ্ধে এই মামলা এবং বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করায় মেয়ে মারিয়াম নওয়াজকে ৭ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। গত সপ্তাহে লন্ডনে চিকিৎসাধীন ক্যান্সার-আক্রান্ত স্ত্রী কুলসুম নওয়াজের মৃত্যু হলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান বাবা ও মেয়ে। কিন্তু সেই নওয়াজকে বুধবার আকস্মিকভাবে মেয়ে ও জামাতাসহ জামিনে মুক্তি দিয়েছে দেশটির আদালত।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক কারামুক্তির পেছনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সৌদি আরব সফরের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ইরানি গণমাধ্যম পার্সটুডে এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান অনেকটা লোকচক্ষুর অন্তরালে মঙ্গলবার সৌদি আরব সফরে যান এবং বুধবার সকালে পাকিস্তানের আদালত নওয়াজ শরীফের মুক্তির প্রক্রিয়া সহজ করে রায় দেয়। বুধবার বিকেলে মুক্তি পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, তার মেয়ে মারিয়াম নওয়াজ এবং জামাতা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মুহাম্মাদ সফদার।

রহস্যজনক কারণে সৌদি আরবের গণমাধ্যম ইমরান খানের রিয়াদ সফরের খবর ফলাও করে প্রচার করেনি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মূলত সৌদি আরবের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা আদায়ের লক্ষ্যে সৌদি আরব সফরে যান। তিনি মঙ্গলবার মদিনা মুনাওয়ারা সফর করেন এবং বুধবার সকালে জেদ্দায় সৌদি বাদশা সালমান ও যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন।

সৌদি গণমাধ্যমে এসব বৈঠকের খবর প্রচারিত হলেও আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের উপায় এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

বুধবার সকালে ইমরান যখন সৌদি বাদশার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তখন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত নওয়াজ শরীফের আটকাদেশ স্থগিত করে জামিনে তার মুক্তির রায় দেয়।

প্রসঙ্গত, এর আগে ১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মুশাররফ পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থান করলে সৌদি আরবের হস্তক্ষেপে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পরিবর্তে রিয়াদে আশ্রয় পেয়েছিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।

পাকিস্তানকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি দিতে এই মুহূর্তে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন খান সরকারের। কোনো কোনো সূত্র আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের কাছ থেকে অর্থনৈতিক প্যাকেজ গ্রহণের সম্ভাবনার কথা বললেও পাক অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর বলেছেন, চীন ও সৌদি আরবের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা গ্রহণের চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ।