নতুন মন্ত্রিসভার প্রজ্ঞাপন জারি

শপথগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দফতর বণ্টন করেও আলাদা আদেশ জারি করা হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বঙ্গভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর মন্ত্রিসভার ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রীকেও শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি।

এরপর সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিয়োগ ও দফতর বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন সম্পন্ন হলো। এর মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করল আওয়ামী লীগ। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।

যদিও এই প্রথমবারের মতো শপথ নেয়ার আগেই রোববার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে কে কোন দফতর পাচ্ছেন তাও জানিয়ে দেন।

প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৪৬ সদস্যের চমকের এই মন্ত্রিসভায় পুরনো মন্ত্রিসভার মাত্র ১৫ জনের স্থান হয়েছে। অর্থাৎ নতুন মন্ত্রিসভায় ৩১ জনই নতুন মুখ। আগের মন্ত্রিসভার হেভিওয়ের মন্ত্রীসহ ৩৭ জনই বাদ পড়েছেন। একই সঙ্গে নতুন মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগ ছাড়া জোটের শরিক দলের কাউকে স্থান দেয়া হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ৬ মন্ত্রণালয়-বিভাগ

নতুন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী নিজের কাছে রেখেছেন।

যে মন্ত্রী যে দফতর পেলেন

১. আ ক ম মোজাম্মেল হক- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
২. ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু
৩. ড. আবদুর রাজ্জাক- কৃষি
৪. আসাদুজ্জামান খান কামাল- স্বরাষ্ট্র
৫. ড. হাছান মাহমুদ- তথ্য
৬. আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক
৭. আ হ ম মুস্তফা কামাল- অর্থ
৮. তাজুল ইসলাম- এলজিআরডি
৯. ডা. দীপু মনি- শিক্ষা
১০. ড. আবদুল মোমেন- পররাষ্ট্র
১১. আবদুল মান্নান- পরিকল্পনা
১২. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন- শিল্প
১৩. গোলাম দস্তগীর গাজী- বস্ত্র ও পাট
১৪. জাহেদ মালেক স্বপন- স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ
১৫. সাধনচন্দ্র মজুমদার- খাদ্য
১৬. টিপু মুনশি- বাণিজ্য
১৭. নুরুজ্জামান আহমেদ- সমাজকল্যাণ
১৮ শ ম রেজাউল করিম- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত
১৯. শাহাব উদ্দিন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
২০. বীর বাহাদুর উশৈসিং- পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক
২১. সাইফুজ্জামান চৌধুরী- ভূমি
২২. নুরুল ইসলাম সুজন- রেলপথ
২৩. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযক্তি
২৪. মোস্তাফা জব্বার- ডাক ও টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি

প্রতিমন্ত্রী

১. কামাল আহমেদ মজুমদার- শিল্প
২. ইমরান আহমদ- প্রবাসীকল্যাণ
৩. জাহিদ আহসান রাসেল- যুব ও ক্রীড়া
৪. নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ
৫. আশরাফ আলী খান খসরু- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
৬. বেগম মন্নুজান সুফিয়ান- শ্রম ও কর্মসংস্থান
৭. খালিদ মাহমুদ- নৌপরিবহন
৮. জাকির হোসেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা
৯. শাহরিয়ার আলম- পররাষ্ট্র
১০. জুনাইদ আহমেদ পলক- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ
১১. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন
১২. স্বপন ভট্টাচার্য- এলজিআরডি
১৩. জাহিদ ফারুক- পানিসম্পদ
১৪. মুরাদ হাসান- স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ
১৫. শরিফ আহমেদ- সমাজকল্যাণ
১৬. কে এম খালিদ- সংস্কৃতিবিষয়ক
১৭. ডা. এনামুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ
১৮. মাহবুব আলী- বেসামরিক বিমান ও পর্যটন
১৯. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ- ধর্মবিষয়ক

উপমন্ত্রী

১. বেগম হাবিবুন নাহার- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পবির্তন
২. এনামুল হক শামীম- পানিসম্পদ
৩. মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল- শিক্ষা

উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পায় ২৮৮ আসন। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোট ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি আসন। তবে এ সাতজনের কেউ এখনও শপথ নেননি।