নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে যা বললেন তোফায়েল

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার বিকেলে শপথ নেবে।

এবারের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীর মতো নেতারা জায়গা পাননি।

ঠাঁই হয়নি রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুর মতো শরীক দলের সিনিয়র রাজনীতিকদেরও।

মন্ত্রিসভার যে তালিকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম প্রকাশ করেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে বিদায়ী মন্ত্রিসভার ৩৬ জনই এবার বাদ পড়েছেন।

আবার একেবারে নতুন করে মন্ত্রিসভায় এসেছেন ২৭ জন অর্থাৎ এবারই প্রথম তারা মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হলেন।

বাদ পড়লেন যারা: আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নূর, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, তারানা হালিম, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, আরিফ খান জয়, মুজিবুল হক, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, এ এইচ মাহমুদ আলী, এ এইচ শাহজাহান কামাল, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মেহের আফরোজ চুমকি, বীরেন শিকদার, মুজিবুল হক চুন্নু, মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, নুরুল ইসলাম বিএসসি, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মতিউর রহমান, লে. কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু, মশিউর রহমান রাঙ্গা, কাজী কেরামত আলী, ইসমত আরা সাদেক, মুজিবুল হক চুন্নু, শামসুর রহমান শরীফ ও মীর্জা আজম।

বাদ পড়া নিয়ে কি বলছেন তোফায়েল আহমেদ?

নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তোফায়েল আহমেদ বলেন প্রধানমন্ত্রী উনার পছন্দমত যোগ্য সৎ আদর্শবাদন ব্যক্তিদের নিয়েই কেবিনেট করেন।

“আমার মনে হয় তিনি সেজন্যই করেছেন ও ভালোই করেছেন”।

মিস্টার আহমেদ বলেন, “আমি ৭২ সাল থেকে প্রতিমন্ত্রী, ৯৬এ মন্ত্রী ছিলাম। নির্বাচনকালীন সরকারে শিল্প ও গৃহায়ন এবং পরে আবার বানিজ্যমন্ত্রী ছিলাম। সুতরাং আমরা যারা পুরনো নতুনদের তো জায়গা দিতে হবে। একসময় তো যেতে হবে”।

বিদায়ী মন্ত্রিসভায় বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা এই প্রবীন রাজনীতিক বলেন, ” আমার মনে হয় উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নতুন যারা কেবিনেটে জায়গা পেয়েছেন তারা সবাই যোগ্য ও আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তারা ভালোভাবেই সরকার পরিচালনা করে দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবেন”।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কি বলছেন?

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এবার যে ইশতেহার দেয়া হয়েছে এবং দলের যে প্রতিশ্রুতি সেটা বাস্তবায়ন বেশ কঠিন। বড় এনার্জি ও নতুন দৃস্টিভঙ্গী লাগবে।

“নতুন যারা এসেছে তাদের অভিজ্ঞতা কম মনে হলেও এদের লেখাপড়া ও বাইরের এক্সপোজার ভালো। অন্যদিকে দলের উপদেষ্টা মন্ডলীতে এরা (বাদ পড়া) সবাই আছেন। তাদের সাথে আলোচনা থাকবে”।

মিস্টার রহমান বলেন সেখানে তরুন ও অভিজ্ঞতা দুটোই মেলাবার সুযোগ থাকবে।

কারা আছেন, কারা নেই, কারা একেবারেই প্রথম এলেন:

পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আর আছেন আকম মোজাম্মেল হক, আহম মুস্তফা কামাল, আসাদুজ্জামান খান, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, ইয়াফেস ওসমান ও মোস্তফা জব্বার।

আর আগে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন কিন্তু এবার মন্ত্রী হয়েছেন তারা হলেন: নুরুজ্জামান আহমেদ, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, এম এ মান্নান, বীর বাহাদুর ও জাহিদ মালিক।

২০০৮ এর মন্ত্রিসভায় ছিলেন কিন্তু ২০১৪ সালে ছিলেননা এমন যারা মন্ত্রী: আব্দুর রাজ্জাক (কৃষি), হাছান মাহমুদ (তথ্য)ও দীপু মনি (শিক্ষা)।

আর একেবারে নতুন করে মন্ত্রিসভায় এসেছেন তাজুল ইসলাম (স্থানীয় সরকার), এ কে আবদুল মোমেন (পররাষ্ট্র), নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (শিল্প), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাট), সাধন চন্দ্র মজুমদার (খাদ্য), টিপু মুনশি (বাণিজ্য), শ ম রেজাউল করিম (গণপূর্ত), মো. শাহাব উদ্দিন (পরিবেশ ও বন), নুরুল ইসলাম সুজন (রেল)।

১৯ জন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন —কামাল আহমেদ মজুমদার (শিল্প), ইমরান আহমেদ (প্রবাসীকল্যাণ), জাহিদ আহসান রাসেল (যুব ও ক্রীড়া), নসরুল হামিদ (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি), আশরাফ আলী খান খসরু (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ), মন্নুজান সুফিয়ান (শ্রম), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (নৌপরিবহন), জাকির হোসেন (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা), শাহরিয়ার আলম (পররাষ্ট্র), জুনায়েদ আহমেদ পলক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি), ফরহাদ হোসেন (জনপ্রশাসন), স্বপন ভট্টাচার্য (স্থানীয় সরকার), জাহিদ ফারুক (পানিসম্পদ), মো. মুরাদ হাসান (স্বাস্থ্য), শরীফ আহমেদ (সমাজকল্যাণ), কে এম খালিদ (সংস্কৃতি), এনামুর রহমান (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ), মাহবুব আলী (বিমান), শেখ মো. আবদুল্লাহ—টেকনোক্র্যাট (ধর্ম)।

এর মধ্যে নসরুল হামিদ, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও শাহরিয়ার আলম বিদায়ী মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

বাকীদের মধ্যে মন্নুজান সুফিয়ান ২০০৮ এর মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

আর অন্যরা সবাই এবারই প্রথমবারের মতো প্রতিমন্ত্রী হলেন।

৩ উপমন্ত্রী হচ্ছেন—হাবিবুন নাহার (পরিবেশ), এ কে এম এনামুল হক শামীম (পানিসম্পদ), মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (শিক্ষা)।

তিনজনই এবার প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হলেন।