নাঈমের ঘূর্ণিতে ২৪৬ রানেই অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

অভিষেকেই জাদু দেখালেন নাঈম হাসান। ব্যাট হাতে একটু অবদান রাখার পর বোলিংয়ের আসল দায়িত্বে রীতিমত ভয়ংকর চেহারায় হাজির ১৭ বছর বয়সী এই স্পিনার। চট্টগ্রাম টেস্টে তার ঘূর্ণি বিষে নীল ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়েছে ২৪৬ রানেই। ফলে ৭৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।

সিমরন হেটমেয়ার আর শেন ডোরিচ যা একটু লড়াই করতে পেরেছেন। এই দুজন হাফসেঞ্চুরি না করলে আরও কম রানেই থেমে যেতে হতো ক্যারিবীয়দের।

৮৮ রানের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে একটা সময় অবশ্য আরও বেশি স্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের সেই স্বস্তিকে অস্বস্তি বানিয়ে ছাড়েন সিমরন হেটমেয়ার। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে টাইগারদের বোলারদের রীতিমত নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছিলেন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটে শেন ডোরিচকে নিয়ে ৯২ রানের বড় এক জুটি গড়ে ফেলেন হেটমেয়ার। অবশেষে ভয়ংকর হেটমেয়ারকে ফিরিয়ে এই জুটিটি ভেঙে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে মুশফিকুর রহীমের ক্যাচ বানিয়েছেন এই অফস্পিনার।

মাত্র ৪৭ বলে ৫টি চার আর ৪টি ছক্কায় ৬৩ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন হেটমেয়ার। এরপর এক ওভারেই দেবেন্দ্র বিশু (৭) আর কেমার রোচকে (২) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন অভিষিক্ত নাঈম হাসান। জোমেল ওয়েরিকনকে বোল্ড করে অভিষেক টেস্টেই পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তিটাও গড়ে ফেলেন এই অফস্পিনার।

শেন ডোরিচ চেষ্টা করেছিলেন এক প্রান্ত ধরে লড়াই করতে। ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে দারুণ এক হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। সঙ্গীর অভাবে শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ৬৩ রান নিয়ে।

এর আগে বাংলাদেশকে ৩২৪ রানে অলআউট করার পর ক্যারিবীয়দের ওপেনিং জুটিটা অবশ্য প্রথম ১০ ওভার খেলে দিয়েছিল একেবারে দেখেশুনে। কিন্তু এই জুটিটা ভাঙার পরই দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারি দল।

১৪ রান করা কাইরন পাওয়েলকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৯ রানের উদ্বোধনী জুটিটা ভাঙেন তাইজুল। পাওয়েল অবশ্য রিভিউ নিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। পরের ওভারের প্রথম বলে সাকিবের টার্নে বোল্ড হন ১ রান করা শাই হোপ। আর ওভারের শেষ বলে ১৩ রান করা ব্রেথওয়েটকে প্রথম স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান সাকিব।

৩১ রানেই তখন নেই ৩ উইকেট। বাংলাদেশি বোলারদের তোপে শুরুর দিকেই রীতিমত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সুনিল অ্যামব্রিস আর রস্টন চেজ। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তারা।

অ্যামব্রিস-চেজের জুটিতে আসে ৪৬ রান। অবশেষে নাঈমের ঘূর্ণিতে ভাঙে থিতু হতে যাওয়া এই জুটিটি। রস্টন চেজকে (৩১) ইমরুল কায়েসের ক্যাচ বানিয়ে টেস্টে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন অভিষিক্ত নাঈম। পরের ওভারে বল করতে এসে তিনি ফিরিয়ে দেন অ্যামব্রিসকেও (১৯)।

নাঈম ৬১ রান খরচায় তুলে নেন ৫টি উইকেট। সাকিব আল হাসান নেন ৩ উইকেট। আর একটি করে উইকেট শিকার তাইজুল আর মেহেদী হাসান মিরাজের।