নিরাপত্তা চেয়ে নিজ থানাতেই ওসির জিডি!

নিরাপত্তা চেয়ে বাউফল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জিডি করায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিজেরাই যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তাহলে তারা সাধারণ মানুষকে কীভাবে নিরাপত্তা দেবেন এমন প্রশ্ন উঠে আসছে আলোচনায়।

অপরদিকে পুলিশকে যেখানে সাধারণ মানুষ সমীহ করে চলে সেখানে নিজ (বাউফল) থানার ওসির নিরাপত্তার জন্য আইন প্রতিকার পেতে নিজ থানাতেই জিডি। এমন অসংখ্য প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১১ মিনিটের সময় বাউফল থানার ওসি মনিরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে মনিরুল ইসলাম শাহিন নামে এক ব্যক্তি ফোন করে বাউফল থানার ওসিকে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ওসি মনিরুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মনিরুল বলেন, শাহীন নামে এক আসামির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি মামলায় চার্জশিট দেয়া হলে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরে আমার নামে মিথ্যা বিষোধগার করে আসছিল। আমার বিরুদ্ধে আদালতে রিট করাসহ আমাকে দেখে নেয়া এবং চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়।

তিনি বলেন, এসব ঘটনার কারণে আমি আইন প্রতিকার পেতে থানায় একটি জিডি করে রেখেছি।

আমরা জানি সাধারণত নিরাপত্তাহীনতার কারণেই জিডি করা হয়, আপনি কি তাহলে নিরাপত্তাহীনতার কারণেই জিডি করেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এখানে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করার কিছু নেই। হুমকি প্রদানের বিষয়টিকে আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসার জন্যই জিডি করা হয়েছে।

জিডিতে আপনি ঠিক কী লিখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিডির বিষয়টি একমাত্র আদালত এবং আমার সুপিরিয়ররাই দেখতে পারেন।

তাহলে প্রাণনাশের যে হুমকির বিষয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সে (শাহিন) আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে এর দ্বারা অনেক কিছুই বোঝানো যেতে পারে। জিডির তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে।

এদিকে ওসিকে হুমকি প্রদানের পর থেকেই আলোচনায় রয়েছে হুমকিদাতা শাহিনের নাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন মৃধার বড় ছেলে মনিরুল ইসলাম শাহিন। বাউফল থানায় দায়ের করা চারটি মামলার আসামি। তিনি অন্তত ৫-৭টি মামলার বাদী। এসব মামলার মধ্যে নিজের ছোট ভাই এবং বাবার বিরুদ্ধেও দায়ের করা মামলা রয়েছে শাহীনের।

এসব বিষয়ে মনিরুল ইসলাম শাহীন বলেন, আমি চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকায় আছি। ঢাকা কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি ঠিকানা জানাতে অনীহা প্রকাশ করেন।