জমি চাষের ট্রাক্টর (কলের লাঙ্গল) এখন কলারোয়ার জনপদের আতংক

নির্বাহী অফিসারের অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিপুল উৎসাহে পুনরায় চালু

কামরুল হাসান, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে দ্রুত জমি চাষের মাধ্যম হিসেবে ট্রাক্টর বা কলের লাঙ্গল অতি পরিচিত একটি কৃষিযান। যেটার পরিবর্তে পূর্বে জমিচাষে ব্যবহার করা হত গরুদিয়ে চালিত লাঙ্গল। কিন্তু সেই কৃষি কাজে ব্যবহারের ট্রাক্টর এখন জমিচাষ বাদ দিয়ে কলারোয়ার জনজীবনে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ পরিবহন হয়ে পৌরশহরসহ গ্রামীণ জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে এখন আতংকিত কলারোয়ার জনপদ ও জনসাধারণ। কৃষির উন্নয়নে এসব ট্রাক্টর আমদানি করা হলেও মালিকরা এগুলো ব্যবহার করছে ভাটার মাটি, ইট, বালু ইত্যাদি মালামাল পরিবহনের কাজে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল জন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার করে ধুলায় পরিনত করে দিচ্ছে। কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ওই যন্ত্রের দ্বারা তৈরীকৃত পরিবহন দিয়ে সেই মাটি পৌরসভার মির্জাপুর ইটভাটাসহ বিভিন্ন ভাটায় সরবরাহ করছে। প্রতিনিয়ত জমি খুড়ে মাঠ থেকে বালু এবং মাটি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। ট্রাক্টরের বিরামহীন চলাচলে গ্রাম ও শহরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পথচারীদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে কলারোয়াতে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে স্কুলগামী কোমলমতি ছোট ছোট শিশুদের পথচলা। বিশালাকৃতির চাকাওয়ালা ট্রাক্টর সনদবিহীন চালকরা বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যায়। ফলে রাস্তা-ঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে চলাচল করছে। বর্তমানে কলারোয়াতে এই ট্রাক্টরের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ২০ থেকে ২৫ বছরের শিশু-কিশোররাও অদক্ষ ভাবে এসব ট্রাক্টর অবাধে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা আওয়াজে চলাচলকারী এসব ট্রাক্টরের কারণে ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছে। সনদবিহীন ট্রাক্টর ড্রাইভারদের ভয়ে সচেতন মানুষ সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কখন কী দুর্ঘটনার খবর শুনতে হয় এই ভেবে। বিশাল চাকার এই কৃষিযান রাস্তায় চলাচলের সময় কার উপর গিয়ে উঠে তা বলা মুশকিল। এ ব্যাপারে কেউ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না বলে দাবি করেছেন এলাকার সচেতন মহল। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলঅকার মানুষ বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু-কিশোরদের অভিভাবক, রাস্তার দু’ধারের নিকটবর্তী বসবাসকারী মানুষসহ দোকানদাররা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে সাংবাদিকদের মাধ্যমে ওই অবৈধ পরিবহন বন্দের জোর দাবি জানিয়েছে। যার ফলশ্রæতিতে গত ১০ মার্চ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান চালিয়ে রাস্তা থেকে ৬টি ট্রাক্টর আটক করেন। তার পর কিছু সময়ের জন্য ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে ওই ট্রাক্টরগুলি ছাড়িয়ে এনে প্রশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বিপুল উৎসাহে আবারও মাটি টানার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকার সচেতন মহলের দাবি, জরুরীভিত্তিতে জনসাধারণকে তাদের রাস্তায় নিশ্চিন্ত চলাচলের ব্যবস্থা করে এলাকার পরিবেশ দুষণের হাত থেকে রক্ষা করা হোক। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ সুধিজন।