‘নির্যাতিতা নয়, ধর্ষকের পরিচয় ভালোভাবে প্রচার করুন’

ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারীদের ছবি এবং নাম-পরিচয় ভালোভাবে প্রচারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন: আজকাল প্রায় শিশু ধর্ষণ, নারী ধর্ষণের কথা শোনা যাচ্ছে। ধর্ষণ একটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। যারা এ কাজ করে তারা সমাজের শত্রু। তাদের প্রতি ঘৃণা জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘আমি বলব, যারা এসব কাজ করছে, তাদের নামধাম পরিচয় ভালোভাবে প্রচার করা দরকার। নির্যাতিতা নারী নয়, যে ধর্ষক বা নির্যাতনকারী, তার চেহারা এমনভাবে প্রচার করতে হবে যেন সমাজের প্রত্যেকটা মানুষ তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। তাকে একেবারে সমাজের বাইরে করে দেয়া প্রয়োজন,’ বলেন তিনি।

এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন: ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এদের শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।

তিনি আরও বলেন: এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, সমস্যাটি বিশ্বব্যাপী। উন্নত, সভ্য দেশেও এই সমস্যাটা রয়েছে। এর বিরুদ্ধে আরও জনমত সৃষ্টি করতে হবে।

ধর্মের নামে নারীদের ঘরে আটকে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারী বিবি খাদিজা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে নারী-পুরুষে বৈষম্য কমে এলেও এখনো রয়েছে। শুধু আইন করলেই বৈষম্য দূর হবে না। সমাজে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। যে সমাজের অর্ধেকই নারী, সেই নারীকে বাদ রেখে কোনো সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। সমাজ গড়তে নারী-পুরুষ উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে।

কন্যাশিশু যেন বৈষম্যের শিকার না হয় এ ব্যাপারে সচেতন হতে বলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সমাজকে গড়ে তুলতে হলে সবাইকে একসাথে কাজ করা দরকার। সমাজ ও দেশকে কল্যাণময় করতে নারী-পুরুষের একসঙ্গে কাজ করা একান্ত প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। লেখাপড়ায় বাংলাদেশে আজ ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। মেয়েরাই সব পেশায় বেশি মনোযোগী। তবে তাই বলে ছেলেদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। ‘আমরা চাই ছেলেরাও এগিয়ে আসুক।’

নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদান এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে দক্ষ নেতৃত্বের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘লাইফটাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এম্পাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সম্মাননাই আমি পাই না কেন, সবই আমার দেশের। আমার সম্মাননা আমি আমার দেশের মা-বোনদের এবং পুরো বিশ্বের সব নির্যাতিতা নারীর নামে উৎসর্গ করছি।’