নিহত, বন্দী সাংবাদিকরা টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব

বিভিন্ন দেশে নিহত ও বন্দী সাংবাদিকদেরকেই ২০১৮ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা টাইম ম্যাগাজিন।

মঙ্গলবার ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে তারা এই ঘোষণা দেয় বলে জানায় মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক সাংবাদিক বন্দী রয়েছেন। ২০১৭ সালে ২৬২ জন সাংবাদিককে বন্দী করা হয়েছে বলে জানায় সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি।

মিথ্যা তথ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে যাচ্ছে। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ, সমালোচনামূলক বাস্তব সাংবাদিকতাকে ‘ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে টাইম কয়েকজন সাংবাদিককে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। এদের মধ্যে একটি সাদৃশ্যই রয়েছে- তাদের কাজের জন্য এসব সাংবাদিককে আক্রমণ করা হয়েছে।

সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করার জন্য তাদেরকে জেলে বন্দী ও হেনস্তা করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাণ হারিয়েছেন তারা।

এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলামিস্ট জামাল খাসোগি। ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঘাতকদের হাতে নিহত হন এই সাংবাদিক।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিএইএ জানিয়েছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা ‘নিশ্চিত’।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিআইএ’র সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দিয়ে সৌদি বা সালমানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অস্বীকার করেছেন।

আগে এবছর জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার কার্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে চার সাংবাদিকসহ পাঁচজন নিহত হন। পত্রিকাটির বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে যাওয়ার পর সেখানে হামলা চালায় এক যুবক। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই পত্রিকাটিকে এর আগে ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি দেয়া হয়েছিল।

অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় মিয়ানমারের আদালত। তাদের অপরাধ ছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দ্বারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যার বিষয়ে প্রতিবেদন করা। ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি রাষ্ট্রের গোপন তথ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী তাদের সাজা দেয়া হয়।

২০১২ সালে সিএনএনের সাবেক কর্মকর্তা মারিয়া রেসা ‘র‍্যাপলার’ নিউজসাইট চালু করেন। সেখানে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতার্তের সমালোচনা করে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তিনি। এরপর থেকেই তাকে ‘ব্যাপক ভাবে আইনি হয়রানী’ করা শুরু করে দুতার্তের বিচার বিভাগ।