নুরের ভিপি পদ গ্রহণ নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল

ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হলে শুধু নুর আর আখতার না, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরও অনেকেই জিততো বলে মন্তব্য করেছেন রাজনীতি-বিশ্লেষক, কলামিস্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা কোটা সংস্কার আন্দোলনের অনেককে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি কুয়েত মৈত্রী হলের নির্বাচনের ফলাফলকে উদাহরণ হিসেবে দেখতে বলেন।
তাহলে ভিপি পদে নুর ও আখতার কীভাবে জিতল সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এই অধ্যাপক।

গতকাল (১২ মার্চ) ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর চমক দেখান কোটা আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর।

জালভোট, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ ছাড়া আর বাকি সব প্যানেল ধর্মঘট, ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ করলেও পরদিন সকালে দেখা যায় সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হয়েছেন কোটা আন্দোলনকারী নুরুল হক নুরু ও এই প্যানেল থেকে সমাজসেবা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন কোটা আন্দোলনকারী আখতার হোসেন।

ফলাফল প্রকাশের কিছুক্ষণ পর সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে ড. আসিফ নজরুল এ বিষয়ে নিজের ফেসবুক পেইজে ‘নুরের বিজয়, নুরের শপথ’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে নুরুল হকের ভিপি পদ গ্রহণ করা উচিত হবে কি-না সে বিষয়েও নিজের মন্তব্য দেন।

তার সেই স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-

‘কুয়েত মৈত্রী হলের নির্বাচনের ফলাফল ভালো করে লক্ষ্য করুন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ব্যালট ভরা বাক্স উদ্ধারের পর ছাত্রীদের তুমুল প্রতিবাদে ফেটে পড়লে নতুন প্রভোষ্ট নিয়োগ দিতে হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপির কোন সুযোগ ছিল না সেখানে। ফলাফল? ১৩টির সব আসনে পরাজিত ছাত্রলীগ।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হলে ডাকসু ও বাকী সব হলের ফলাফল হয়তো তাই হতো। ডাকসুতে শুধু নুর আর আখতার না, জিততো কোটা আন্দালনের আরো অনেকে।

বিভিন্ন আলামত দেখে এটা মনে হয় যে কোটার অনেককে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নুর আর আখতারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যবধান এতো বিশাল ছিল যে কারচুপি করেও তাদের হারনো যায়নি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে নুরের কি ডাকসু ভিপি পদ গ্রহন করা উচিত?

আমার মতে কোটা আন্দোলনের নেতারা সবাই যদি রাজী থাকে তাহলে তার ডাকসু ভিপির পদ গ্রহন করা উচিত। ডাকসু ভিপি হিসেবেই হয়তো ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরো বেগবান করা সম্ভব।

তবে নুরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোটা আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে। বাম বা ছাত্রদলের মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ হতো যদি তারা কোটার নেতাদের সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করতো। তারা এটি করেনি।

নুরের মধ্যে আমি দেখি তরুন বয়েসের বঙ্গবন্ধুর ছায়া। সাধারন ছাত্রদের নির্যাতনকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনোভাবেই নেই।’

(ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)