নুসরাতের মামলা গোটা আলেম সমাজের অপমান : কারাবন্দি সিরাজ

ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মামলার আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন। ১৪ এপ্রিল রবিবার বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তারা এই দায় স্বীকার করেন। আদালতে ওই দুই আসামি প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি নির্দেশ। জবানবন্দিতে তারা খুনের পরিকল্পনা, হত্যা মিশন ও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য আদালতকে জানিয়েছেন।

রাফি হত্যা মামলার আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা জেল থেকেই তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তবে কারাবন্দি সিরাজের যুক্তি- নুসরাত যৌন নিপীড়নের মামলা করে গোটা আলেম সমাজকে হেয় করেছে। তাই তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। সিরাজের এ নির্দেশনা পেয়েই নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ছক করে অপর আসামিরা।

নুর বলেন, এপ্রিলের ১ ও ৩ তারিখ কারাগারে আটক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানেই নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অধ্যক্ষের পরামর্শেই নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার এ বিষয়টি নিশ্চিত করে।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন আনুমানিক সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় ঘটনাস্থলে ছিলেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদের এবং আরও কয়েকজন। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘যৌন নির্যাতনের মামলা হওয়ায় আলেম সমাজকে হেয় করা হয়েছে- এই ধরনের যুক্তি দিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ জেলে থেকেই তার সাঙ্গপাঙ্গোদের নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন।সেই নির্দেশ মতো নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় তারা।’

তিনি বলেন, ‘নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার আরও একটি কারণ আমরা জেনেছি। তা হলো- নুসরাতকে মামলার এজহারভুক্ত তৃতীয় আসামি শাহাদাত প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে সে প্রস্তাব নুসরাত ফিরিয়ে দেয়। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি শাহাদাত। মনে মনে প্রচণ্ড ক্ষোভ জন্মে তার। নুরসাতকে পুড়িয়ে মারার পেছনে সেই আক্রোশটাও কাজ করেছে।’