পদ্মা সেতুতে বসল ত্রয়োদশ স্প্যান, দৃশ্যমান ২ কিলোমিটার

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে শনিবার সকালে পদ্মা সেতুর ত্রয়োদশ স্প্যান বসানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেতুর ১ হাজার ৯৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর ত্রয়োদশ এ স্প্যান বসানো হয়।

এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লৌহজং উপজেলার মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩-বি নামে স্প্যান নিয়ে রওনা হয় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই। তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেনটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য স্প্যানটি নিয়ে বেলা পৌনে ১২টার দিকে নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছে যায়।

পরে আলো সল্পতার কারণে শুক্রবার কাজ স্থগিত করা হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে স্প্যান বসানোর কাজ শুরু করে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। অবশেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেতুর ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান বসাতে সক্ষম হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর ত্রয়োদশ স্প্যান বসানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান বসাতে সক্ষম হন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। আর এ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর ১ হাজার ৯৫০ মিটার দৃশ্যমান হলো।

পদ্মা সেতুর প্রকৌশল সূত্র আরো জানায়, চলতি মাসেই শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের মাঝামাঝি ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর সেতুর দ্বাদশ স্প্যান বসানো হয়েছিল। এখন প্রতি মাসেই এক থেকে একাধিক স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এতে করে পদ্মা সেতুর মহাকর্মযজ্ঞে গতিশীলতা এসেছে বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে, শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছিল। চার মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান বসে। এর পর থেকে একের পর এক স্প্যান বসতে থাকে পদ্মা সেতুতে। শনিবার সর্বশেষ ত্রয়োদশ স্প্যান বসানো হলো মাওয়া প্রান্তে। এতে পদ্মা সেতুতে বসতে বাকি থাকল আরো ২৮টি স্প্যান।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পদ্মা সেতুর ৪২ পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১৫০ মিটার। দোতলা আকৃতির এ সেতু কংক্রিট ও স্টিলের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু নির্মাণের মহাকর্মযজ্ঞ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি নামে চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে। এ ছাড়া একই দেশের প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো নদী শাসনের কাজ করছে।