পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হলো না করপোরাল আজিজুলের

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হলো না সেনাবাহিনীর করপোরাল আজিজুল হকের। মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাঙামাটির মানিকছড়িতে পাহাড় ধসে হতাহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে ৪ সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে তিনিও নিহত হন। আজিজুল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা তরফপাসাইল গ্রামের আমির উদ্দিন মুন্সীর ছেলে।

মারা যাওয়ার আগের দিন সোমবার রাতে স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয় আজিজুলের। স্বামীর শোকে স্তব্ধ আনোয়ারা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তার স্বামী ২২ জুন ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসবেন এই কথা তাকে জানিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, বাড়িতে এসে ছেলে শাকিল আহমেদ রিফাত ও মেয়ে শাহনাজ আজিজ রিতাকে সঙ্গে নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জে মার্কেটে গিয়ে পরিবার ও স্বজনদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করবেন। কিন্তু তার স্বামীর আর সেই আশা পূরণ হলো না।

আনোয়ারা আক্ষেপ করে বলেন, আমার স্বামী প্রায় ৪ মাস আগে ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে আমার স্বামীর অনেক পরিকল্পনা ছিল। এখন কীভাবে স্বামীর স্বপ্ন পূরণ হবে এই প্রশ্ন আনোয়ারার।

আজিজুলের বড় ভাই আব্দুল হাশিম জানান, ৪ ভাই ২ বোনের সংসারে আজিজুল ছিল ভাইদের মধ্যে ৩ নম্বর। ১৯৯৫ সালে সৈনিক পদে আজিজুল সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। আগামী বছরের এপ্রিলে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার।

তিনি আরও জানান, বাড়িতে এসে অবসরের পেনশনের টাকা দিয়ে ব্যবসা করার পাশাপাশি ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করাবেন। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে।

আবুল হাশিম আরও জানান, তার ভাইয়ের স্ত্রীকে যদি যোগ্যতা অনুযায়ী একটি চাকরি দেওয়া হয় তাহলে এই পরিবারটি দাঁড়াতে পারবে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আজিজুলের মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকায শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে তার মৃতদেহ দাফনের জন্য পারিবারিক গোরস্থানে কবর প্রস্তুত করার কাজ চলছে।

স্থানীয় মগটুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মামুন বলেন, আজিজুলের অকাল মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত। আমরা এলাকাবাসী অপেক্ষা করছি কখন আজিজুলের মৃতদেহ এলাকায় এসে পৌঁছবে।

তিনি আরও বলেন, আজ সকালে চট্রগ্রামে জানাজা শেষে আজিজুলের মৃতদেহ হেলিকপ্টারে করে ঢাকা আসবে, পরে মৃতদেহ ময়মনসিংহ ঈশ্বরগঞ্জের নিজ গ্রামে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।