পাঁচ আসামির জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা

ফেনীর নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত পাঁচজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রোমহর্ষক তথ্য বের হয়ে এসেছে। এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের সাথে নারীর সরাসরি সম্পৃক্ততায় হতবাক ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী শিক্ষক সবাই। তাদের ধারণা আত্মহত্যার নামে ঘটনা সামলে নেয়ার আশ্বাসেই মনি ও পপি কিলিং মিশনে যোগ দিয়েছিল। খবর সময় টিভি’র।

শিক্ষকরা বলছেন, এ বিষয়টি নিয়ে সমাজ গবেষকদের এখনই ভাবতে হবে।

গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে, সহপাঠী বান্ধবী নিশাতকে মাদ্রাসার ছাদে নির্যাতন করা হচ্ছে, এমন কথা বলে পপি ক্লাস রুম থেকে তার সহপাঠী নুসরাতকে ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে অধ্যক্ষ সিরাজের মামলা তুলে নিতে কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে।

নুসরাত রাজি না হলে পপি নুসরাতের ওড়না দিয়েই তার দুই হাত পিঠ মোড়া করে বাঁধে। শামীম মুখ চেপে নুসরাতকে মেঝেতে ফেলে দেয়।

পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আরেক সহপাঠী মনি নুসরাতের বুক আর পপি পা চেপে ধরে। জাবেদের পাশাপাশি শামীমের ইশারায় যোবারেরও কেরোসিন ঢেলে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়। মূল কিলিং মিশনে থাকা ৫ জনের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উঠে আসে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের এমন ভয়ংকর নির্মমতার গল্প।

আর নুসরাতের সহপাঠী-শিক্ষকদের ভাবনায় এই লোমহর্ষক ঘটনায় নারীর সম্পৃক্ততার মানসিক শক্তির পেছনে ছিল বড় শক্তি ও শক্তিশালী পরিকল্পনা।

নুসরাতের সহপাঠীরা জানান মনি আর পপি যে এমন একটি কাজের সাথে জড়িত আমরা তা ভাবতেও পারিনি। একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়েকে কিভাবে এরকমভাবে হত্যা করতে পারে বলেও প্রশ্ন তুলেন তারা।

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মামুনুর রশীদ বলেন, নৃশংস ঘটনার সাথে নারী সম্পৃক্ততা বন্ধে সমাজ গবেষকদের ভূমিকা নিতে হবে।

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গ্রেফতার হয় অধ্যক্ষ সিরাজ।

আর এই ঘটনার জের ধরেই গত ৬ এপ্রিল নুসরাতকে পরিকল্পিতভাবে আগুনে ঝলসে দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।