পাকিস্তানের কাছে তথ্য পাচার, ভারতীয় প্রকৌশলী গ্রেপ্তার

ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) কর্মরত এক প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, একটি ক্ষেপণাস্ত্রের গোপন তথ্য পাকিস্তানের কাছে পাচার করেছেন তিনি। উত্তর প্রদেশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড এবং মিলিটারি ইনটেলিজেন্সের (এমআই) যৌথ অপারেশনে নাগপুরের ডিআরডিও বিভাগ থেকে গতকাল সোমবার নিশান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিশান্ত আগারওয়াল নামের এই প্রকৌশলী চার বছর ধরে ডিআরডিওতে কাজ করছেন। গত বছর ভারতের ‘যুব বিজ্ঞানী পুরস্কার’ পান উত্তরাখন্ডের বাসিন্দা নিশান্ত। কিছুদিন আগে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, প্রতিরক্ষা গবেষণার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মী হয়েও নিশান্ত পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে গোপনে তথ্য পাচার করছেন। পুলিশ তাঁর ল্যাপটপে প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত অত্যন্ত গোপন তথ্য পেয়েছে। তাঁর সঙ্গে ফেসবুকে পাকিস্তানের নাগরিকদের যোগাযোগের প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। ওই প্রতিষ্ঠানের আরও দুই বিজ্ঞানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

শুধু পাকিস্তান নয়, নিশান্ত আগারওয়াল মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকেও ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মাসংক্রান্ত গোপন ও সুরক্ষিত তথ্য পাচার করেছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনার পর ভারতের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ব্রহ্মা পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। এটি মাঝারি দূরত্বের সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল। ব্রহ্মা সাগর, স্থল, আকাশপথ থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব। রাশিয়া ও ভারতের যৌথ প্রয়াসে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি হয়েছিল। নিশান্ত আগারওয়াল সিনিয়র সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নাগপুরে ব্রহ্মা মিসাইল রিসার্চ সেন্টারের টেকনিক্যাল রিসার্চ বিভাগে কাজ করতেন। গত সপ্তাহেই বিয়ে করেছেন নিশান্ত। নিশান্ত আগারওয়াল ছাড়াও ডিআরডিওর কানপুর দপ্তরের আরও দুজন বিজ্ঞানীর ওপরও নজর রাখছে অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড এবং এমআই। ভারতের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় যা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

গুপ্তচরবৃত্তির আঁচ পেয়ে অত্যন্ত গোপনে নিশান্তের ওপর নজর রাখার কাজ শুরু করেছিল উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস মোকাবিলা বাহিনীর যৌথ দল। বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরে নিশান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, অর্থের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তিসংক্রান্ত তথ্য পাচার করেছেন নিশান্ত আগারওয়াল। প্রেমের ফাঁদে ফেলে নিশান্তকে দিয়ে ওই কাজ করা হয়েছে কি না, পাকিস্তান ছাড়া আর কোনো দেশ তথ্য পেয়েছে কি না—এসবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রাশিয়ার সঙ্গে সম্প্রতি এস ৪০০ মিসাইল নিয়ে চুক্তি সই হওয়ার পরই ডিআরডিওর ভেতরে গুপ্তচরের খবর পাওয়া গেল। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও টিওআই