পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা উ. কোরিয়ার

পারমাণবিক অস্ত্র ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জন উন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বহুল-প্রত্যাশিত বৈঠককে সামনে রেখে শনিবার তিনি এই ঘোষণা দিলেন।-খবর বিবিসি ও এএফপির।

ট্রাম্প তার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র জাপান তাতে সন্তুষ্ট নয়।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইটসুনোরি অনোডেরা হুশিয়ারি করে বলেছেন, এ সত্ত্বেও টোকিও পিয়ংইয়ংকে সর্বোচ্চ চাপ দিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার এই ঘোষণায় আমরা সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। কারণ দেশটির নেতা তার ঘোষণায় স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি পরিত্যাগের কথা উল্লেখ করেনি।

তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা পারমাণবিক, ক্ষেপণাস্ত্র ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র পরিত্যাগ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পিয়ংইংয়ের ওপর জাপান অব্যাহত চাপ দিয়ে যাবে।

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি ঘোষণাই প্রত্যাশা করেছিল। কোরীয় উপদ্বীপে কূটনৈতিক কার্যক্রমে এটাকে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে দেখছে তারা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় বলেন, উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক কর্মসূচি স্থগিত ও একটি পরীক্ষা স্থল বন্ধে সম্মত হয়েছে। এটা খুবই ভাল খবর ও বিশাল অগ্রগতি। এখন আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রত্যাশা করছি।

উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ১২ এপ্রিল থেকে উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষা ও আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, কোরীয় উপদ্বীপে অর্থনৈতিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা মুন জেই-ইনের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বসতে যাচ্ছে কিম জন উন।

জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এক নজিরবিহীন বৈঠকের প্রত্যাশা করছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরীয় নেতার এটাই হবে প্রথম কোনো বৈঠক।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দিকে গেলে দেশটির জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র বলেন, উত্তরের এই ঘোষণার মধ্যে অর্থপূর্ণ অগ্রগতি রয়েছে। উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আসন্ন বৈঠকের সফলতার জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে এটা সহায়ক হবে।

তবে পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরিত্যাগ করবে কি না, সে ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি কিম।

উত্তর কোরিয়া গত বছর সবচেয়ে শক্তিশালী ষষ্ঠ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার কথাও জানিয়েছে।