পেটের ক্ষুধা নাকি মনের ক্ষুধা?

দুই ধরনের ক্ষুধা ঠিকভাবে সামলাতে পারলেই স্বাস্থ্যকর ওজনের লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব। শরীরের স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জনের একমাত্র উপায় হল খাদ্যাভ্যাস আর শরীরচর্চার সঠিক মিশ্রণ। লক্ষ্য অর্জনের ৭০ শতাংশ খাদ্যাভ্যাস আর ৩০ শতাংশ শরীরচর্চার উপর নির্ভরশীল, তাই খাদ্যাভ্যাসই যে মূল বিষয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা সহজ কাজ নয়। কী খাবেন? কতটুকু খাবেন? কখন খাবেন? ইত্যাদি নানান বিষয় জানতে হবে। আর বিষয়টাকে আরও জটিল করে তোলে দুই ধরনের ক্ষুধা। যে কারণে মানুষ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে দূরে সরে যায়, এমন কিছু খেয়ে ফেলে যা খাওয়া উচিত ছিল না।

পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল কীভাবে পেটের ক্ষুধা আর মনের ক্ষুধার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে এবং কোনটাকে কীভাবে সামলাতে হবে।

পেটের ক্ষুধা আর মনের ক্ষুধার মধ্যে পার্থক্য: দুই ধরনের ক্ষুধার বৈশিষ্ট্য ভিন্ন, যা জানা থাকলে দুটো আলাদা করা খুবই সহজ। পেটের ক্ষুধা হঠাৎ করে দেখা দেয় না, ধীরে ধীরে তৈরি হয়। আর এই ক্ষুধার অনুভুতি পেটেই হয়। এই ক্ষুধায় কোনো নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খেতে ইচ্ছা হয় না। যে খাবারে পেট ভরে সেই খাবার খেলেই এই ক্ষুধা চরিতার্থ হয়।

অপরদিকে, মনের ক্ষুধা হঠাৎ করে হানা দেয়, যে কোনো সময়। এসময় একটি নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খেতে ইচ্ছা করে। আর সবচাইতে বাজে ব্যাপার হলো, মনের ক্ষুধা সহজে নিবারণ হয় না।

সামলানোর উপায়ৎ: প্রকৃত ক্ষুধা বা পেটের ক্ষুধা নিবারণ করতে চাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের সঠিক ও স্বাস্থ্যকর মিশ্রণ। থাকতে পারে কয়েক ধরনের প্রোটিন, বিভিন্ন রংয়ের সবজি। শরীরে সঠিক ধরনের জ্বালানি সঠিক মাত্রায় সবরবাহ করাই এই ক্ষুধা চরিতার্থ করার প্রধান উপায়।

মনের ক্ষুধাকে বশে আনতে প্রথমেই জানতে হবে তার কারণ। হতে পারে বিরক্তি, হতাশা, আবেগ। এক্ষেত্রে সেই অনুভূতি ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে।

সেজন্য হাঁটতে বেরোতে পারেন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমাতে পারেন। যেকোনো কিছু যা আপনাকে ওই বিশেষ ধরনের খাবারটি খাওয়া চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সেটাই করতে পারেন।

তবে মনে রাখতে হবে, হাঁটতে গিয়ে কিংবা আড্ডা দিতে গিয়ে আবার মনের ক্ষুধাকে প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না।

খাওয়ার সময় মনোযোগ থাকা চাই খাবারের দিকে। তাই টেলিভিশন কিংবা মোবাইলে কিছু দেখতে দেখতে না খাওয়াই ভালো। এমনটা করলে এবং খাবারের প্রতি মনোযোগ না থাকলে খাবারের পরিমাণ বোঝা মুশকিল। যার ফলাফল হবে প্রয়োজনের চাইতে বেশি খেয়ে ফেলা।

খাবার খাওয়ার সময় সঙ্গে এক গ্লাস পানি রাখা উচিত। খাওয়ার আগে পানিটুকু পান করলে ক্ষুধার মাত্রা বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কতটুকু খাবার আপনার প্রয়োজন।

পাতে তুলেছেন বলে খাবার নষ্ট হবে এই ভেবে জোর করে খাওয়া চেষ্টা করা উচিত নয়। আর এজন্য ক্ষুধা যত কম বা বেশি হোক না কেনো পাতে কম খাবার নিয়ে শুরু করা বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রয়োজন হলে আবার খাবার নিন। এতে ওজন যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে, হজমতন্ত্রও সুস্থ থাকবে।