পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত, বাসে আগুন

ন্যূনতম মজুরি কাঠামো বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়েছে তারা।

এদিন সকালে উত্তরার পরিবর্তে গাজীপুরের সড়ক অবরোধ করেন তারা। পরে পুলিশি বাধার মুখে সোয়া ১১টার দিকে তারা আবদুল্লাহপুর ও উত্তরার দিকে চলে আসেন। বর্তমানে সড়কের দু’পাশে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।

শ্রমিকদের এই অবরোধের মধ্যেই দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বরে এনা পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সদরদফতর কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার এরশাদ বাসে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের একপর্যায়ে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর ও দক্ষিণখানের পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আব্দুল্লাহপুর থেকে উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কের দু’পাশ বন্ধ রয়েছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আলী হোসেন খান বলেন, শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে পুলিশের সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই, তবে কিছু দাবি অযৌক্তিকও আছে। অনেক গার্মেন্ট কারখানা সরকারি মজুরি কাঠামো মেনে বেতন দেয় কিন্তু সেখানকার শ্রমিকরাও সড়কে নেমেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি।

অপরদিকে শ্রমিকরা জানান, নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী ৫১ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি শুধু সপ্তম গ্রেডের ক্ষেত্রেই দিচ্ছে মালিকরা। সমান মজুরি দেয়া হচ্ছে না, মূল্যায়ন করা হচ্ছে না অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে। রোববার দুপুরে মালিকপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে সে আশ্বাস উপেক্ষা করে সোমবার সকাল থেকে আবারও তারা মাঠে নেমেছেন।

এদিকে একই দাবিতে গাজীপুরে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে শ্রমিকরা বিভিন্ন গার্মেন্ট থেকে বিক্ষোভ সহকারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন। এক পর্যায়ে তারা ওই মহাসড়কে বিভিন্ন পরিত্যাক্ত বস্তু ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। ফলে ওই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ শ্রমিক আহত হন। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফের যান চলাচল শুরু হয়।

গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, সকালে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ করলে ১১টার দিকে ধাওয়া দিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, রোববার দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা উত্তরার সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে মালিকপক্ষ ও পুলিশের আশ্বাসে তারা সড়ক থেকে সরে যান।