পোষা প্রাণী কি শ্বাসযন্ত্রের জন্য খারাপ?

গবাদিপশু ও উপকারী প্রাণী ছাড়াও আজকাল অনেকে শখ করে বাড়িতে কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ইত্যাদি প্রাণী লালনপালন করেন। পাখিও পোষেন অনেকে। তবে পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল ও কুকুরই সবচেয়ে জনপ্রিয়। কিন্তু মনে রাখবেন, যাঁদের হাঁপানি, অ্যালার্জি ইত্যাদি রোগ আছে, তাঁদের জন্য এই শখ ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।

বিড়ালের অ্যালার্জেনের মূল উৎস হচ্ছে তাদের ত্বকে অবস্থিত তৈলাক্ত গ্রন্থি।

এই গ্রন্থি থেকে কিছু অ্যালার্জেন উপাদান নিঃসৃত হয় ও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কুকুরের মূল অ্যালার্জেন হচ্ছে লালা। লোমের ভূমিকা তুলনামূলক কম। কুকুর-বিড়াল ছাড়াও অন্য কিছু পশু অ্যালার্জির কারণ হতে পারে; যেমন* ঘোড়া, ইঁদুর, গিনিপিগ, খরগোশ ও পাখি। এদের শরীরের নানা উপাদানের সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত সংবেদনশীল ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্র পেশি সংকুচিত হয়, নানা রাসায়নিক নিঃসৃত হয়, শ্বাসনালি সরু হয়ে পড়ে। ফলে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়।তবে যাঁরা পশুপাখি ভালোবাসেন, তাঁরা কিছু বিষয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিলে ভালো থাকতে পারেন।

* গৃহের ভেতর রোমশ প্রাণীর চলাচল সীমিত রাখুন। পোষা প্রাণীর চলাফেরা একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখা ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় বাড়ির বাইরে, সিঁড়ির নিচে বা বাগানে গ্যারেজে রাখতে পারলে।
* শোয়ার ঘরে ঢুকতে দেবেন না। বিছানা, সোফা, চেয়ার ইত্যাদিতে বসতে দেবেন না। ঘরের কার্পেটমুক্ত অংশে তাদের চলাচল করতে দিন।
* যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাঁরা খাঁচা অন্য কাউকে দিয়ে পরিষ্কার করাবেন।
* পোষা প্রাণীর যেকোনো চর্মরোগ হলে তার দ্রুত চিকিৎসা করাবেন। এ ছাড়া এদের নিয়মিত পশুর চিকিৎসক দেখাবেন ও টিকা দেবেন।
* রোগীর ঘর থেকে অবশ্যই দূরে রাখবেন।
* পোষা প্রাণীকে নিয়মিত গোসল করাবেন ও পরিচ্ছন্ন রাখবেন।
* খাবার প্রস্তুত বা পরিবেশন করার সময় এদের কাছে না রাখাই ভালো।

ডা. মো. আজিজুর রহমান
বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল