পৌনে এক ঘণ্টা পর খবর পায় ফায়ার সার্ভিস

রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে ইলিয়াছ আলী মোল্লা বস্তিতে আগুন লাগার পৌনে এক ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয়েছে বেশি, রক্ষা করা যায়নি কিছুই।

জানা গেছে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ইলিয়াছ আলী মোল্লা বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হলেও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয় রাত পৌনে ৪টার দিকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করতে আরও বেশ কিছু সময় লেগে যায়। ততক্ষণে সারা বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন লাগার পর তা নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৩টি ইউনিট কাজ শুরু করে। এরপর সাতটি ও পরে আরও একটি ইউনিট বাড়ানো হয়।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিফিল ডিফেন্স অধিদফতরের ডিউটি অফিসার মাহফুজুর রহমান জানান, তারা প্রায় তিন ঘণ্টা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে সকাল ৭টা ২৪ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে আগুন পুরোপুরি নির্বাপন করতে আরও সময় লাগে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বস্তিটিতে যদি আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া যেতো তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হতো ও আরও অনেক আগে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যেতো। কিন্তু দেরিতে খবর পাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, এখানে আগুন লাগে রাত সাড়ে ৩টার দিকে। কিন্তু আমাদের খবর দেয়া হয় ৪টার পর। ফায়ার কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করতে আরও কিছু সময় তো লাগেই। এর মধ্যে আগুন পুরোপুরি লেগে যায় বস্তিতে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আগুনে দগ্ধ এক মহিলাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিহত কিংবা হতাহতের কোনো সংবাদ আমরা এখনও পাইনি।

‘বস্তিটিতে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বস্তিটিতে ৮ হাজারের বেশি ঘর রয়েছে। যতোটুকু ধারণা করা যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ঘর পুড়ে গেছে।

অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লা অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বস্তিটিতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। ঘর রয়েছে সাত থেকে আট হাজার।

এর আগে রোববার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানে দুটি বাসাবাড়ি ও টোকিও প্যাকেজিং নামে একটি কারখানার গুদাম পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে ডিইপিজেড (ঢাকা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আর শনিবার (১০ মার্চ) ভোরে পিরোজপুর শহরের কলেজ রোড এলাকায় ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে ১৫টি স্থাপনা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এর মধ্যে ৮ বসতঘর ও ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

অপরদিকে (৯ মার্চ) শুক্রবার গভীর রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আগুনে পুড়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়। এতে আহত হন আরও দুইজন। উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের মরফলা গ্রামের শীল পাড়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আর শুক্রবার বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার পশ্চিম জিরাবো বাগানবাড়ি এলাকায় তিনটি তৈরি পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই আগুনে আরও একটি বাড়ির ২০টি কক্ষ এবং কক্ষের ভেতরে থাকা সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।