প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক, বাঁচবেন যেভাবে

চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস। এসময় পরিবেশের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। প্রচণ্ড গরমে আমাদের অবস্থাও হয় নাজেহাল। প্রচণ্ড দাবদাহে যে সব স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হয় তার মধ্যে হিটস্ট্রোক অন্যতম।

গরমে আশপাশের তাপমাত্রা বেড়ে গেলেও শরীর নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখতে ঘাম নিঃসরণ করে। ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে শরীরকে শীতল করে। আর্দ্রতা বাড়লে শরীর গরম হয়ে যায় আর ঘামের বাষ্পীভূত যাওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে দেহের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। একসময় শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় এবং হিটস্ট্রোক হয়।

হিটস্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে উঠে যায়। হৃদযন্ত্র বিকল হলে রক্তচাপ কমতে থাকে। ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস কমে যায়। কিডনি কাজ না করায় প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ: মাথাব্যথা, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, ক্লান্ত হয়ে পড়া, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, মাংসপেশিতে ব্যথ্যা ও হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। তবে তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা না নিলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যাবে।

হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করবেন যেভাবে:

* রোদ থেকে দূরে থাকতে হবে। কাজ করুন খোলা হাওয়া কিংবা স্বস্তিকর পরিবেশে।

* গরমের সময় সারা দিনই একটু পর পর প্রচুর পানি পান করুন। প্রচণ্ড গরমে এর পরিমাণ হতে পারে তিন লিটারেরও বেশি।

* ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতির পোশাক পরুন।

* একাধিকবার গোসল করুন। রোদে বের হলে ছাতা ব্যবহার করুন।

* শিশু ও বয়স্কদের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

* প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক হোন। প্রস্রাবের রং খেয়াল করুন। গাঢ় রঙের হলে আরো বেশি করে পানি পান করুন।

হিটস্ট্রোক হলে:

* রোগীকে ফ্যানের বা এসির নিচে ঠাণ্ডা পরিবেশে আনতে হবে। রাস্তাঘাটে হিটস্ট্রোক হলে হাতপাখা বা পেপার দিয়ে জোরে বাতাস করতে হবে।

* সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে।

* দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা কমানো জরুরি। এ জন্য মাথা ও শরীরে বেশি করে পানি ঢালতে পারেন।

* রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

ডা. ফাহিম আহমেদ রুপম
মেডিসিন এন্ড ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
ইমপালস হাসপাতাল, তেঁজগাও, ঢাকা