প্রধান বিচারপতিকে জোর করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে : ফখরুল

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে জোর করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আজ সবার কাছেই এটা স্পষ্ট, প্রধান বিচারাপতিকে জোর করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। যদি জোর করেই বিদেশে না পাঠাবেন, সরকারের উচিত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলতে দেয়া। কিন্তু সরকার তাকে কোন কথা বলতে দিচ্ছে না কেন?’

শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামকে তার শান্তিনগরের বাসায় দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। এ সময় ১৫ অক্টোবর ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া প্রসঙ্গেও কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে পরামর্শ পেতে গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ২৪ অগাস্ট থেকে শুরু হয় নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ।

এবার দলগুলোকে নিবন্ধনক্রমের নিচ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে হিসাবে বিএনপির জন্য ১২ অক্টোবর ও আওয়ামী লীগের জন্য ১৫ অক্টোবর সংলাপের তারিখ প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু বিএনপি দলীয় কর্মসূচির কথা বলে ১৫ অক্টোবর বসতে চাইলে তাদের জন্য সেই দিনই ঠিক হয়। আর আওয়ামী লীগের অনুরোধে তাদের সংলাপের জন্য ১৮ অক্টোবর তারিখ রাখা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আমরা সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনের আগে ও পরে সেনা মোতায়েন, আরপিও’র বিভিন্ন ধারা সংশোধনসহ বিভিন্ন প্রস্তাব দেব। একাদশ সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি ‘সামগ্রিক প্রস্তাবনা’ তুলে ধরা হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা বড় টিম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে যাব, সেখানে গিয়ে লিখিতভাবে আমাদের সমস্ত প্রস্তাব তাদের সামনে তুলব। ইট উইল বি এ ভেরি কমপ্রিহেনসিভ। আমি মনে করি যে, এটা (প্রস্তাবনা) একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে’।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিশেষ করে সরকার প্রধানের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের কথা বলেছি যে, এটা এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যে, এখানে একটা পরিবর্তন আসা দরকার। তারা (ক্ষমতাসীনরা) সংবিধানে যেসব সংশোধনী করেছে, সেই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে এই নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু হবে- সেটাও কিন্তু প্রশ্ন থেকেছে সংশোধনীর মধ্যেই। যেমন পার্লামেন্ট ডিজলবড (বিলুপ্ত) হবে না। পার্লামেন্ট ডিজলবড না করলে কীভাবে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে? আমাদের এখানে একটা ট্র্যাডিশন হয়ে আসছে, মানুষের মধ্যে একটা সাইকি তৈরি হয়েছে যে, সেনাবাহিনী নিয়োগ না করলে নির্বাচনে সুষ্ঠু অবস্থা আশা করা যায় না। এই বিষয়গুলো আমরা বলেই আসছি, সংলাপেও বলব’।

ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি স্পেকুলেট করতে পারি কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আমাকে তো আশাবাদী হতে হবে, আমাকে তো পথ বের করতে হবে। পথ বের বের করার জন্যে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি- শেষ পর্য্ন্ত চেষ্টা করে যাব, যেন আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারি, যেন সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হয়’।

সহায়ক সরকারের রূপরেখার প্রস্তাবনা কী নির্বাচন কমিশন দেবেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেব না, আমরা তাদেরকে ধারণাটা দেব। দি পারসেপশন উইল বি গিবেন এবং আমরা এটা বলব যে, এটা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। রূপরেখাটা আমরা পরে দেব’।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল ও চেয়ারপারসনের ‍প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।