প্রশ্নফাঁসে বিপুলসংখ্যক ব্যক্তির ওপর নজরদারি দুরূহ ব্যাপার

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, মাঠপর্যায়ে ট্রেজারি-নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র বিতরণ পর্যায়ে প্রায় ২৭ হাজার কর্মকর্তা-শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত থাকেন। এ পর্যায়ে যে কোনো একজন ব্যক্তির দ্বারাও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঝুঁকি থেকে যায়। এ বিপুলসংখ্যক ব্যক্তির ওপর নজরদারি নিশ্চিত করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার।

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াতির কারণে অযোগ্যরা জিপিএ পাচ্ছেন- সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন-মুদ্রণ ও বিতরণের স্থলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র মুদ্রণের সঙ্গে জড়িতদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা, প্রশ্নপত্র মুদ্রণ ও ট্রাংকজাত করার সময় তদারকি দল গঠন, পরীক্ষার সময়সূচি ও পুনঃনির্ধারণ করে দুটি বিষয়ের পরীক্ষার সময়ে ব্যাপ্তি কমিয়ে পরীক্ষার সময়কাল কমিয়ে আনা ইত্যাদিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এমনকি পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনের সুবিধাসংবলিত ঘড়ি, কলম যেকোনো অনুমোদনবিহীন ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র খোলার নির্দেশনা জারি করা হয়। তথাপি পরীক্ষা শুরুর অল্প কিছু সময় আগে-পরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হওয়ার অভিযোগ আসে। সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজবের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে ৫২টি মামলায় ১৫২ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামীতে অনুষ্ঠেয় বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাগুলোকে বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের পরামর্শে পরীক্ষা পদ্ধতিতে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উচ্চ আদালত এ বিষয়ে একটি বিচার বিভাগীয় এবং একটি প্রশাসনিক কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।

এমপিওভুক্তির বিষয়ে মুহা. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১০ সালে সারা দেশে ১ হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে। নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।