প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতারা সরকারদলীয় : বিএনপি

পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতারা সরকারদলীয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, সরকারি দলের রাঘববোয়ালেরা জড়িত থাকার কারণেই কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হচ্ছে না। জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না।

আজ রোববার সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর আমলেই প্রশ্নফাঁসের মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তার দিনকে দিন প্রসারিত হচ্ছে। বিগত ১০ বছরে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন, এসএসসি, এইচএসসি, জেএসসি, পিইসি, এমনকি নার্সিং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে। কোনো কোনো পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলেও শিক্ষামন্ত্রী নির্লজ্জের মতো তা অস্বীকার করে পরে জনমতের চাপে সেই পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির মূল হোতারা ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ায় আজ পর্যন্ত এসব ঘটনার বিচার হয়নি।

রিজভী বলেন, ‘বিগত ১০টি বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন ফাঁসে যে ক্ষমতাসীনেরা জড়িত, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক রানা, হল শাখার নাট্য সম্পাদক মামুনসহ ১৫ জনের গ্রেপ্তার। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, দেশজুড়ে সকল প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির মূল হোতা আওয়ামী লীগ ও তার দলের লোকেরা। এরা দেশকে পরনির্ভরশীল করতেই শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেশের একজন প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী বলেছেন, রাষ্ট্রকে ক্রিমিনাল স্টেটে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে। দলীয়করণ করে শিক্ষার মান ধ্বংস করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধাবীদের রেখে ঘুষ–বাণিজ্যের মাধ্যমে দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আবার পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিতে বোর্ড থেকে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষকদের। প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ধ্বংস করার সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ভোটারবিহীন সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এখন মরণব্যাধির নাম প্রশ্নপত্র ফাঁস। এটা যেন এখন ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য হয়ে পড়েছে।