প্রিয়া সাহার অভিযোগ শুনে হেলিকপ্টার খুঁজলেন ট্রাম্প!

৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘু বিলীন হওয়ার অভিযোগ তুলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের কাছে নালিশ দিয়েছেন বাংলাদেশি এক নারী। ওই নারীর নাম প্রিয়া সাহা। ধর্মীয় নীপিড়নের শিকার হওয়া ১৯টি দেশের ২৭ জন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎকালে ওই নারী নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে এমন মন্তব্য করেন।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজে ওই সাক্ষাৎকারটি অনুষ্ঠিত হয়। এমন খবর সম্প্রচার করে মার্কিন টিভি চ্যানেল এবিসি নেটওয়ার্কের চ্যানেল এবিসি ফোর ইউটাহ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই ভিডিওটি এর মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে নানা ধরণের মন্তব্য করছেন অনেকেই।

ভিডিওতে দেখা যায়, শাড়ি পরিহিত ওই নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলছেন, ‘স্যার আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বোদ্ধ, খ্রীষ্টান বিলীন হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই। সেখানে এখনো ১৮ ‍মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু থাকার জন্য সাহায্য করুন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি-ঘর হারিয়েছি, তারা আমার বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা আমরা জমিজমা দখল করে নিয়েছে। কিন্তু তারা ( প্রসাশন/ সরকার) কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এখন পর্যন্ত।’

এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই নারীকে প্রশ্ন করেন, ‘কারা জমি দখল করেছে, করা বাড়ি-ঘর দখল করেছে?’

ট্রাম্পের প্রশ্নের উত্তরে ওই নারী বলেন, ‘তারা মুসলিম মৌলবাদি গ্রুপ এবং তারা সব সময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়। সব সময়ই পায়।’

এর পর ট্রাম্প আর সেসব অভিযোগের কোনো উত্তর না দিয়ে তার সহকর্মীদের কাছে জানতে চান, হেলিকপ্টার ল্যান্ড করেছে কিনা!

এদিকে এ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক বাংলাদেশিই ওই নারীর এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, কেউ কেউ করেছেন কড়া মন্তব্য। খান আমির নামের একজন বাংলাদেশি ওই ভিডিওর নিচে মন্তব্য করেছেন, ‘এই মহিলা একজন মিথ্যাবাদী। তিনি একজন আদর্শ বাঙালি নন। যদি তিনি তা হতেন, তবে নিজের দেশের নামে এমন মিথ্যা তথ্য দিতেন না। আমরা বাঙালিরা সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছি।’

যুবায়ের আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু মানুষ খুব নিরাপদ এবং আরামদায়ক জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, কোনো ধর্মীয় অস্থিরতা নেই- যেমনটা এই নারী উল্লেখ করেছেন। আমি মনে করি তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ বা তার নিশ্চয় একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।’ হৃদয় সাহা নামের আরেকজন সনাতন ধর্মালম্বী লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশি এবং আমার ধর্ম হিন্দু। আমি এখানে শান্তিতে বাস করছি। এই নারী একেবারেই ভুল তথ্য দিচ্ছেন।’

উল্লেখ্য, প্রিয়া সাহা নামের ওই নারী বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক। পাশাপাশি প্রিয়া সাহা বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘শারি’-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্বরত আছেন। এছাড়া, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদেরও একজন সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন