ফখরুলের সংসদে না যাওয়ার ব্যাখ্যা চাইলেন গয়েশ্বর

বিএনপির জনপ্রতিনিধিদের সংসদে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।পাশাপাশি দলের মহাসচিবের শপথ না নেয়ার বিষয়েও কথা বলেন তিনি।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করেন জাতীয়তাবাদী নবীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

দলীয় জনপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণের ঘোর বিরোধী হিসেবে পরিচিত গয়েশ্বর রায় বলেন, যারা সংসদে যোগ দিয়েছেন, তারা জনগণের চাপে নাকি সরকারের চাপে যোগ দিয়েছেন- এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে তাদের শপথের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ না নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল কেন সংসদে যোগ দিলেন না, নিশ্চয়ই সে বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দেবেন।এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।

সরকারের সঙ্গে বিএনপির কোনো আপস হয়নি উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করলে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রাখা হতো না।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ফল বর্জন করা বিএনপি সংসদে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু বহু নাটকীয়তার পর দুই দফায় বিএনপির পাঁচ সংসদ সদস্য শপথ নিয়েছেন।এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্তে বিএনপির এমপিরা সংসদে যোগ দিয়েছেন বলে গুঞ্জন চলছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে সরকার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে আলোচনা সভায় গয়েশ্বর বলেন, লন্ডনে সফররত সরকারপ্রধানের কথায় এটি স্পষ্ট যে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের সময়টা এখন সবচেয়ে খারাপ। কারণ, প্রধানমন্ত্রী যদি জনগণের ভোটে জয়লাভ করতেন, তাহলে তার মুখ থেকে নাবালকসূচক বক্তব্য আসতো না। আর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যখন শেখ হাসিনা বলেন— আমি তখন খুব প্রাউড ফিল (গর্ববোধ) করি। কেন? কারণ, তারেক রহমান রাজনীতিতে একটা ফ্যাক্টর। তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত। তিনি দেশপ্রেমিক জনগণের নেতা। এ কারণে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) লন্ডন গেছেন চোখের চিকিৎসা করাতে, নাকি মনের চিকিৎসা করতে, আমি জানি না।’

দলীয় নেতাদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, আমরা যখন সাহস করে মাঠে নামার জন্য ডাক দেবো, তখন তারা (জনগণ) নেমে যাবেন। দেশবাসী আমাদের সঙ্গে নামার জন্য অপেক্ষা করছেন। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী, আমরা কর্মসূচি দিলে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। কারণ, বিএনপি জনগণের দল।’

খালেদা জিয়ার জামিন না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, ‘১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তিনদিনের মধ্যে জামিনে পেলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার ১৪ মাস লাগবে কেন? বিচারপতিদের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা আছে? তাহলে, তারা কেন এরকম আচরণ করছেন? তারা এরকম করছেন সরকারের নির্দেশে। সরকারের নির্দেশ না মানলে তাদের চাকরি থাকবে না।’

গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘তারেক রহমানকে একটি মামলায় খালাস দিয়েছিলেন যে বিচারক, তিনি দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আপাতত দেশে আসতে পারবেন এরকম কোনো সম্ভাবনাও নেই।’

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।