ফরিদপুরে বিএনপি কর্মীদের হামলায় আ.লীগ নেতা নিহত

ভোটের প্রচারের দ্বিতীয় দিন প্রাণ ঝরল ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে। পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশররাফ হোসেনের কর্মী ইউসুফ আল মামুনকে। তিনি নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন আরো একজন আওয়ামী লীগ নেতা।

মঙ্গবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গি গ্রামে একটি চায়ের দোকানে খুন হন আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ আল মামুন।

ঘটনাটি যে বিএনপির সমর্থকরা ঘটিয়েছেন, সেটি স্বীকার করেছেন বিএনপির সমর্থনে জয়ী একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

এদিকে আজকেই প্রথম নির্বাচনী জনসভা করেন নৌকার প্রার্থী খন্দকার মোশাররফ। তিনি তার আমলে এলাকায় উন্নয়নের কথা তুলে ধরে আবার ভোট চান। আর তার কর্মীকে যখন হত্যা করা হয় তখন এলডিআরডি মন্ত্রী ছিলেন কানাইপুরের জনসভায়।

এই ঘটনায় সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। বলেছেন, হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পর চায়ের দোকানে বসে রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা করছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউসুফ আল মামুন। এক পর্যায়ে বিএনপির সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করেন মামুন। বাধে তর্ক।

এক পর্যায়ে মামুনের উপর চড়াও হন বিএনপির সমর্থকরা। ক্রমাগত পেটানো হয় তাকে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লালন ফকিরও।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা বলেছেন, ‘এই হামলার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশকে বিএনপি অশান্ত করার চেষ্টা করেছে। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি।’

ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে ইউসুফের মরদেহ এবং আহত লালনকে দেখে তারা মর্মাহত হন। সেই সঙ্গে প্রকাশ করেন ক্ষোভ।

বিএনপি সমর্থিত নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশতাকুজ্জামান স্বীকার করেছেন, ঘটনাটি তার দলের সমর্থকরা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউসুফের সঙ্গে মজিদ নামে একজনর চা খাচ্ছিলেন। তিনি বিএনপির সমর্থক, তবে কোনো পদে নেই। সে এক পর্যায়ে শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করে। ইউসুফ ঘটনার প্রতিবাদ করলে দুই জনের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি শুরু হয়।’

‘এই খবর পাওয়ার পর মজিদের স্বজনরা আশেপাশের এলাকা থেকে এসে দোকানের ঝাপ দিয়ে ইউসুফকে পেটায়। এতে মারা যান তিনি।’

ফরিদপুর কোতয়ালি থাকার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দেব বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, ‘ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ এলাকায় ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’