ফের গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার

ফের নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গ্যাসের ৬৬ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।

এতে সাড়াও দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এ নিয়ে আগামী ১১ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকতার গণশুনানির আয়োজন করেছে কমিশন।

গণশুনানির নামে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘চক্রান্ত’ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজ।

এব্যাপারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পরিচালক (গ্যাস) ও চিফ ইনোভেশন অফিসার মো. রেজানুর রহমান বলেন, এলএনজি গ্যাস উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। এজন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এ প্রস্তাব। আর ভোক্তার বিড়ম্বনার বিষয়টি শুনানিতে থাকবে, এটাকে গুরুত্ব দেবে কমিশন।

আমদানি করা এলএনজির কারণে এ খাতের ব্যয় বেড়েছে। যা সমন্বয়ের জন্যই গ্রাহক পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির এ উদ্যোগ।

আবাসিক খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবে বলা হয়, গ্রাহক পর্যায়ে এক বার্নারের গ্যাসের চুলা ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা, দুই বার্নারের চুলা ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং মিটারযুক্ত চুলার ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ৬৫ পয়সা করার কথা বলা হয়েছে।

আবেদন গৃহীত হলে আবাসিক ছাড়াও দাম বাড়বে বিদ্যুৎকেন্দ্র, ক্যাপটিভ পাওয়ার, সিএনজি, শিল্প ও সার কারখানায় ব্যবহূত গ্যাসের দাম।

রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে আশুলিয়া, সাভার, আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর, পাইকপাড়া, পীরেরবাগ, কল্যাণপুর, শ্যামলী, রিংরোড, মনসুরাবাদ, কাদিরাবাদ, বৃহত্তর মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, আজিমপুর, হাজারীবাগ এবং এর আশপাশের এলাকায় গৃহস্থালিতে গ্যাসের সরবরাহে সমস্যার কথা জানা গেছে।

এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের পরিচালক, অপারেশন প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, আগের চেয়ে রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় এমন সমস্যা আছে।

তিনি বলেন, এলএনজির গড় ক্রয় মূল্য ৩২ টাকার উপরে, আর তা বিক্রয় করা হয় ৭ টাকায়। এজন্য সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে যে ঘাটতি তা কমাতে দাম বৃদ্ধি কিছুটা যৌক্তিক। তাছাড়া বেশি ভর্তুকি দেওয়ায় এ সেক্টরের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে।

প্রতি ইউনিট ৩২ টাকা দরে আমদানি করে ওই গ্যাস ৭ টাকা ১৭ পয়সা দরে বিক্রি করার কারণে গেল ছয় মাসে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার।

এদিকে গণশুনানির নামে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘চক্রান্ত’ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে প্রতিবাদী নাগরিক সমাজ।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, নাগরিক আন্দোলনের নেতা শরিফ উদ্দিন শরীফ, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, মানুষ গ্যাস দিয়ে রান্না করতে পারে না কিন্তু দাম ঠিকই দিতে হয়। এ ছাড়াও সারাদেশে সিলিন্ডার ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ থাকায় জেলায়-উপজেলায় বেশি দামে গ্যাস কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন শুধু জনগণের পকেট কাটে।