ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখবেন যেভাবে

লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা (সিএ) পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। সিএ নিয়ে সমালোচনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয়তা নিয়েও হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ ডিলিটফেসবুক আন্দোলন।

কিন্তু যাদের ফেসবুক ব্যবহারের বিকল্প নেই, তার ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে কী করতে পারেন?
• ফেসবুকে লগইন করুন। এর পর অ্যাপ সেটিং পেজে যান।

• অ্যাপসে ক্লিক করুন

• তারপর অ্যাপস, ওয়েবসাইটস অ্যান্ড প্লাগিন্সের এডিট বাটনে ক্লিক করুন

• এবং প্ল্যাটফর্মটিকে ডিজেবল করে দিন।

এটি করার অর্থ হচ্ছে, আপনি ফেসবুক থেকে তৃতীয় কোনো পার্টির সাইট ব্যবহার করতে পারবেন না।
কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যে এটি খুব বেশি হয়ে যাচ্ছে, তখন অন্য কোনো পক্ষ যাতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সীমিতপরিসরে ব্যবহার করতে পারে এবং আপনিও তৃতীয় পার্টির সাইট ব্যবহার করতে পারেন, তারও উপায় আছে।

• ফেসবুকে লগইন করুন। তারপর অ্যাপ সেটিং পেজে যান।

• অ্যাপসে ক্লিক করুন

• তারপর ‘অ্যাপস আদার্স ইউজে’ গিয়ে আপনার যেসব তথ্য অন্য কোনো অ্যাপস দেখুক, সেটি না চান তা হলে সেগুলো আনক্লিক করুন। এর মধ্যে যেমন আছে জন্মতারিখ, পরিবার, ধর্মীয় পরিচয়, আপনি অনলাইন কিনা, আপনার টাইমলাইনের পোস্ট, আপনার আগ্রহ ইত্যাদি বিষয়।
ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখতে হলে আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে:

ইস্ট এংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক পল বের্নাল বলেন, আপনি যদি কোনো খেলা খেলতে চান বা কোনো কুইজে অংশ নিতে চান তা হলে সেটি ফেসবুকের মাধ্যমে না করে সরাসরি ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে করবেন।

তিনি বলেন, ফেসবুক লগইনের মাধ্যমে এসব করা খুব সহজ কিন্তু এটি করার অর্থ হল যারা এসব অ্যাপ তৈরি করেছে, তারা তখন আপনার প্রোফাইল থেকে ব্যক্তিগত তথ্য পেয়ে যাবেন।

আর কীভাবে আপনি ফেসবুকের তথ্য রক্ষা করতে পারেন?

আপনি যদি চান আপনার এসব ব্যক্তিগত তথ্য পুরোটাই গোপন থাকুক, তা হলে এর জন্য একটিই উপায় আর সেটি হল ড. বের্নালের মতে- ফেসবুক ছেড়ে চলে যাওয়া।

লোকজন যদি সেটি করতে শুরু করে, তখনই ফেসবুক এ ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন ও সক্রিয় হতে বাধ্য হবে।

ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর অনেকেই টুইটারে প্রচার চালাচ্ছেন হ্যাশট্যাগ দিয়ে। তারা বলছেন- ডিলিট ফেসবুক কিংবা বয়কট ফেসবুক।

কিন্তু ড. বের্নাল মনে করেন বহু মানুষ যে ফেসবুক ছেড়ে চলে যাবে সে রকমটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন, বিশেষ করে যারা মনে করেন ফেসবুক তাদের জীবনেরই অংশ, তারা ফেসবুকে থেকেই যাবেন।

এসব তথ্য কতদিন রাখা হয়? ইউরোপে তথ্য সুরক্ষা আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহারকারীর তথ্য ‘যত দিন দরকার তারা ততদিনই’ সংরক্ষণে রাখতে পারবে। কিন্তু এই ‘রাখতে পারবে’ কথাটির অর্থ নানা রকম হতে পারে।

ফেসবুকের ক্ষেত্রে এটি এ রকম- যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি সেটি ডিলিট না করবেন, ততক্ষণ সেটি ফেসবুকে থাকবে। এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য।

ব্যবহাকারী চাইলে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিতে পারেন। যার অর্থ ‘কিল’ করা।

কিন্তু ফেসবুক সবসময় চায় আপনি অ্যাকাউন্ট একেবারে বন্ধ না করে দিয়ে যেন কিছু সময়ের জন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে ব্রেক বা বিরতি নেন।

তারা আপনাকে ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেট করার পরামর্শ দেন যাতে আপনি আবার চাইলে ফেসবুকে ফিরে আসতে পারেন।-বিবিসি অনলাইন।