বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জিরাফের মৃত্যু

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকান প্রাণী কমন ইল্যান্ডের আক্রমণে গুরুতর আহত মাদী জিরাফটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

এর আগে গত ১১ জুলাই আক্রমণের শিকার হয় জিরাফটি। পরদিন ১৩ জুলাই জিরাফটিমারা গেলেও ঘটনাটি প্রকাশ পেয়েছে আজ সোমবার।

পার্ক সূত্রে জানা যায়, পার্কের আফ্রিকান সাফারিতে জিরাফ, জেব্রা, অরিক্স, ব্লেজবার, গ্যাজেল, ব্লেজবাগ, ব্লু ওয়াইল্ড বিষ্ট ও কমনইল্যান্ড একত্রে বাস করে। ১১ জুলাই কোনো এক সময় পার্কের বড় জিরাফটিকে আক্রমণ করে কমন ইল্যান্ড। এ সময় কমন ইল্যান্ডের ধারালো শিং জিরাফের পেটের ডান পাশে ঢুকে নারীভূড়ি বের হয়ে আসে। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে পরদিন জিরাফটিকে অস্ত্রোপচারের জন্য চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। অনেক চেষ্টার পর ১৩ জুলাই অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে অধিক রক্তক্ষরণের কারণে শেষ পর্যন্ত জিরাফটিকে বাঁচানো যায়নি। ওই দিনই জিরাফটি মারা যায়।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, আফ্রিকান সাফারি বেষ্টনি থেকে কমন ইল্যান্ড সরানোর জন্য একাধিকবার চিঠি দিয়ে উপরস্থ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এসব প্রাণির সঙ্গে কমন ইল্যান্ড মিলেমিশে থাকতে পারে না। এর আগেও বেশ কিছু প্রাণিকে কমন ইল্যান্ড আক্রমণ করে গুরুতর জখম করে। আরও একটি জিরাফ শাবককে গুরুতর আহত করলে পরে চিকিৎসা করে ভালো করানো হয়। কিন্তু এবার জিরাফকে বাঁচানো গেল না।

চিকিৎসা বোর্ডের সদস্য শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল জলিল জানান, অনেক বড় প্রাণিদের অজ্ঞান করা বেশ কঠিন কাজ। জিরাফটিকে বনেে ভেতরে রেখে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করতেই অনেক সময় লেগে গেছে। এর মধ্যে অধিক রক্তক্ষরণ হয়েছে। অজ্ঞান করে অস্ত্রোপচার করার পর আর জ্ঞান ফিরেনি জিরাফের।

তিনি বলেন, এখনই জরুরি ভিত্তিতে কমন ইল্যান্ডগুলো আলাদা বেষ্টনীতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। নইলে এর আক্রমণে আরও অনেক প্রাণিই প্রাণ হারাবে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কমন ইল্যান্ডের গুতোয় নাকি অন্য প্রাণির গুতোয় প্রাণিটি মারা গেছে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক চেষ্টা করেও জিরাফটিকে বাঁচানো যায়নি। ময়নাতদন্তের পর জিরাফটিকে পার্কেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। আফ্রিকান সাফারি থেকে কমন ইল্যান্ডগুলো সরানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে শিগগিরই।