বনানীতে ফের আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ, থানায় মামলা

রাজধানীর বনানীতে ফের আবাসিক হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কুশান ওমর সুফি নামে এক ব্যক্তি মামলার বাদী ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

গত ২০ নভেম্বর রাতে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের ৬০ নম্বর ‘হোটেল সুইট ড্রিমের’ ৮০৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন এই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কুশান ওমর সুফি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ১৩ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণের মামলা করেছেন ঘটনার শিকার তরুণী। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। অভিযোগকারী তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এখনও রিপোর্ট দেয়নি। আমরা ঘটনার পরপর সব আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সুফির সঙ্গে তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে মামলা দায়ের করা হয়। আমরা তদন্ত করছি। রিপোর্ট পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মামলার এজাহারে ওই তরুণী অভিযোগ করেন, দেড় বছর ধরে কুশানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। তাদের উভয়ের পরিবারও বিষয়টি জানতো। তবে বিয়ের বিষয়টি এড়িয়ে যায় কুশান।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৯ নভেম্বর ওই তরুণী কুশানের বাসায় যান বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে। এসময় কুশানের বোন তরুণীকে বাসায় প্রবেশ করতে বাধা দেন। তখন কুশান তরুণীকে নিয়ে হোটেল ‘সুইট ড্রিম’-এ আসে। এসময় বিয়ের কথা বললে তরুণীকে মারধর করা হয়। রাত দেড়টার দিকে কুশান তাকে ধর্ষণ করে। এরপর হোটেলে বসেই বিষয়টি মোবাইল ফোনে বনানী থানা পুলিশকে জানান তরুণী।

তখন টহল পুলিশ ওই হোটেলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে বলে জানান বনানী থানার ওসি। এরপর তরুণীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়। তরুণীর লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে নেওয়া হয়।

তবে আটকের পর কুশান ও তার স্বজনরা থানায় বসে তরুণীকে বিয়ের কথা বলে ছাড়া পান। বর্তমানে কেউ গ্রেফতার নেই। মামলার এজাহারে একমাত্র কুশানকেই আসামি করা হয়েছে। মেডিক্যাল রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।

পুলিশ জানায়, কুশান এবং ওই তরুণীর আত্মীয়-স্বজন সবাই থানায় এসেছিলেন। সেখানে কুশান সবার সামনে ক্ষমা চায় এবং ২১ নভেম্বর তারা পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে লিখিত আপস মীমাংসাও হয়। উভয়পক্ষ তাতে স্বাক্ষর করে।

২১ নভেম্বর ফের ওই তরুণী কুশানের বাসায় যান। কিন্তু তাকে বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কুশানের পরিবার তাকে জানায় যে, কুশানকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এসময় কুশানের পরিবার তরুণীকে হত্যার হুমকি দেয় বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, গত ২৩ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি নম্বর ৯৩৫)) করেন তরুণী।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। এ ঘটনার ৪০ দিন পর ৬ মে বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন এক তরুণী। সেই মামলার বিচার এখনও চলছে।