ঘূর্ণিঝড়, বন্যা-ভূমিধসের ঝুঁকিতে লাখো রোহিঙ্গা

সামনেই ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম। মৌসুমি ঘূর্ণিঝড়, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বন্যা, ভূমিধসের ঘটনায় স্থানীয়দের পাশাপাশি এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়েও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করা এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিষয়টিকে মাথায় রেখে যৌথভাবে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

গত বছরের আগস্টের শেষদিকে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন শুরু হলে বাস্তুচ্যুতরা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ইতোমধ্যে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করছে। দ্রুত তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী শিবির নির্মাণ করে সরকার। পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত ওই শিবিরগুলোয় বর্ষা মৌসুমে নানামুখী সঙ্কটে পড়তে পারে আশ্রিতরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বন্যা ও ভূমিধসের শঙ্কায় রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। জুলাইয়ে এর মাত্রা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করে।

শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, কুতুপালং-বালুখালী শিবিরের তিন-চতুর্থাংশ এলাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে দুর্ভোগের শিকার হবে ৮৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। এ ছাড়া আরো ২৩ হাজার শরণার্থী ভূমিধসের শিকার হতে পারে।

সংস্থাটির এক মুখপাত্র ক্যারোলিন গ্লাক জানান, এলাকাটিকে নিরাপদ করতে ইতোমধ্যে ১২৩ একর এলাকা বুলডোজার চালিয়ে সমতল ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। শরণার্থী সংস্থা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি যৌথভাবে এটি করেছে। শিবিরে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে অভিবাসন সংস্থা। বন্যার সময় বাথরুম, টয়লেট ভেসে যাওয়া এবং পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশের দুর্যোগব্যবস্থা অধিদফতরের সচিব শাহ কামাল জানান, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার শরণার্থী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করছে। তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস জানাতে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা দেখা দিলে এক লাখ শরণার্থীকে অস্থায়ীভাবে বঙ্গোপসাগরের কোনো দ্বীপে নেওয়া হতে পারে।