বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ : রাজনীতিতে কি প্রভাব?

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা শনিবার পদত্যাগ করেছেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের সাথে তার দ্বন্দ্বের যে অভিযোগ ওঠে- সেই ঘটনাক্রমের মধ্যে দিয়েই এই পদত্যাগ।

এ নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয় তাতে বিরোধীদলও জড়িয়ে যায়।

এই পদত্যাগের কি প্রভাব হতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের রাজনীতি ও বিচার বিভাগের ওপর?

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রহমান বলছেন, এই পদত্যাগের রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে।

বিরোধী দলগুলো বিষয়টিকে ইস্যু করতে পারে। যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন। এবং সে নির্বাচনে এই পদত্যাগের বিষয়টি একটি আলোচিত বিষয় হয়ে থাকবে।

রায়ের সংশোধনীর পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে যেসব মন্তব্য করেছেন, তা সঙ্গত ছিল কিনা, সে প্রশ্ন করা যেতে পারে।

আইনি ব্যাখ্যার বিষয়ে মন্তব্য না করে অধ্যাপক রহমান বলছেন, রাজনৈতিক ইস্যুতে বিচারপতি এসকে সিনহার মতামত দেয়া যেমন সঙ্গত ছিল না। একই ভাবে রাজনীতিবিদেরা তাকে যেভাবে চিহ্নিত করেছেন সেটাও সঙ্গত ছিল না।

তিনি বলছেন, পুরো বিষয়টি থেকে সরকার বা বিরোধীরা লাভবান হয়নি। বরং বিচার বিভাগের ক্ষতি হয়েছে।

অধ্যাপক রহমান মনে করেন, সাধারণত বিচারপতিরা রাজনৈতিক বিষয়ে মত দেন না, বরং এই ঘটনা সমাজে বিচারপতিদের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ণ করেছে।

তবে, বিচারপতি, বিচার বিভাগ এবং আইনজীবী সকলের জন্য এটা একটা শিক্ষা, যে নিজেদের গণ্ডির বাইরে কারো কোন মন্তব্য করা উচিত না।

গতকাল সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধান বিচারপতি।

যাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল একটি ঘটনা বলে মনে করছেন অনেকেই।

আওয়ামী লীগেরই নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকারের আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে সামরিক শাসনের সময় একজন বিচারপতিতে সরিয়ে দিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ। এই একটি ইতিহাস আছে।

কিন্তু তাছাড়া প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলে পরবর্তীতে এভাবে পদত্যাগপত্র দাখিলের আর কোন নজির নেই।”

-বিবিসি বাংলা