বাংলাদেশে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়াতে উৎসাহী চীন

বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহৎ পরিসরে বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন চীনের ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক সময়ে এদেশের আর্থ-সামাজিক যে অগ্রগতি হয়েছে, সেটিই টানছে চীনের ব্যবসায়ীদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতের পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো গেলে দেশের অর্থনৈতিক ভিত আরো শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি চীন। যাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির ১৫ শতাংশ। চীন বাড়ছে আকাশের বুকে। একই সঙ্গে গত অর্ধযুগ ধরেই দেশটি তার বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে।

ভূ রাজনীতিতে শক্তিশালী বাংলাদেশের সঙ্গে ৪ দশকের নিবিড় কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও আশপাশের মিয়ানমার, পাকিস্তান, কাজাখিস্তানের মতো দেশের তুলনায় কমই হয়েছে এ দেশে চীনের বিনিয়োগ। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি নজর কেড়েছে দেশটির ব্যবসায়ীদের।

ইউনান সানি রোডস অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন লিমিটেডের ডেপুটি চেয়ারম্যান লিও ফেলিয়াং বলেন, চীনে একটি কথা আছে, যদি তুমি অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে চাও, শুরুতে সড়ক বানাও। অর্থনৈতিক উন্নতির প্রথম ধাপই হলো সড়ক কাঠামোর উন্নয়ন। এছাড়া আমাদের দু’দেশের মধ্যে পর্যাপ্ত তথ্য বিনিময়ের সুযোগ নেই। সেটি করতে হবে। পাশাপাশি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি স্বচ্ছ অংশগ্রহণ এবং প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

হুয়াংউই মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুয়াংফু বো বলেন, আমার মতো অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না। আমরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কিন্তু কোথায়, কেমন করে, কিভাবে সেটা করা যাবে তা আমরা এখনো জানি না। সবার আগে চীনের ব্যবসায়ীরা যদি এ বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারে, তবে সেটা হবে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উপকারী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা গেলে দেশের সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বড়ো ভূমিকা রাখতে পারে চীনের এ আগ্রহ। ঐতিহাসিকভাবে ভারতের সাথে বিদ্যামান ভালো সম্পর্ক অব্যাহত রেখেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরো বাড়ানোর যেতে পারে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেন, চীনের যে টেকনোলজি ও উদ্বৃত্ত অর্থ রয়েছে সেটা ভারতের নেই। উইন-উইন সিচুয়েশনে যাতে কাজ করা যায়, বাংলাদেশ সেদিকে নজর রাখবে। অনেক সময় নিজেদের দোষে প্রকল্প পিছিয়ে যায়, সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিন্তু এগোনো যায় না, এসব সমস্যা দূর করতে হবে।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, গত ২ বছরই চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।