বাংলাদেশ থেকে আরও শ্রমিক নিতে আগ্রহী সৌদি

বাংলাদেশ থেকে আরও শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে সফররত সৌদি সুরা কাউন্সিলের স্পিকার ড. আব্দুল্লাহ বিন মোহাম্মেদ বিন ইবরাহিম আল-শেখ। এ সময় তিনি সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি বিশেষ করে পেশাজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার ও দক্ষ শ্রমিকদের প্রশংসা করেন।

শুক্রবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সৌদি স্পিকার।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেন সৌদি স্পিকার।

বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। ২৬ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে কর্মরত আছেন। বেশ কয়েক বছর সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ ছিল। তবে গত বছরের আগস্ট থেকে সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি পুনরায় শুরু হয়।

সৌদি আরব-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির মধ্যদিয়ে সম্প্রতিক বছরগুলোতে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অনুরূপ মনোভাব প্রকাশ এবং স্পিকারকে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প সর্ম্পকে অবহিত করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘ভিশন ২০২১’-এর আওতায় খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য বিমোচন, পল্লী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অন্যান্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।

সৌদি স্পিকার মুসলিম উম্মাহর সংহতি ও ঐক্য আরও জোরদারকরণের বিষয়েও আলোচনা করেন।

সৌদি স্পিকার আশা প্রকাশ করেন আগামী ২১ মে রিয়াদে অনুষ্ঠেয় আরব ইসলামিক আমেরিকান ঐতিহাসিক সম্মেলনে মুসলিম উম্মার নেতৃবৃন্দ এই অঞ্ছলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে গঠনমূলক আলোচনা করবেন।

ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ. এম. আল-মুতায়রি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গেও বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন সৌদি স্পিকার।

এ সমসয় বাংলাদেশ অতিথিপরায়ন দেশ উল্লেখ করে মজলিসে শুরার স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এ দেশের স্পিকার যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন তা মনে রাখার মতো এবং ওই আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি ছিল না। এ আন্তরিকতার কারণেই সৌদি বাদশাহও শিগগিরই এ দেশ সফর করবেন। সৌদি স্পিকার তার এ সফর নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে বলেও উল্লেখ করেন।

সাক্ষাৎকালে উভয় স্পিকার দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনাকালে স্পিকার শিরীন শারমিন দুই দেশের সংসদীয় পর্যায়ে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, উভয় দেশের সংসদীয় পর্যায়ে সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক সুদৃঢ় করা সম্ভব।

এ সময় বাংলাদেশের স্পিকার সৌদি মজলিশে শুরার স্পিকার ও প্রতিনিধি দলের সম্মানে এক মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন।

প্রতিনিধি দলে সৌদি শুরা কাউন্সিলের সদস্য ড. সালেহ এ.এস আলসিহাইব, ড. ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আব্দুল আজিজ আল দারাব ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ.এম. আল মুতাইরি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, হুইপবৃন্দ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিবৃন্দ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবদুর রব হাওলাদারসহ সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।