বাজেট পাসের দিনই শেয়ার বাজারে ধস

নতুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস করেছে জাতীয় সংসদ। পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার এই বাজেট বর্তমান অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১১তম বাজেট। নতুন অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রস্তাবিত বাজেট পাসের দিন রবিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক ও লেনদেন উভয় কমেছে। তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাসের পাশাপাশি এদিন ছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শেষ দিন। অর্থাৎ দরপতন দিয়েই ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষ করল দেশের শেয়ারবাজার।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সুপারিশ এবং সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে পাস হওয়া এ বাজাটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি বর্তমান অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১১তম বাজেট। গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিজার্ভ ও বোনাস লভ্যাংশের ওপর কর আরোপ সংক্রান্ত প্রস্তাবের ব্যাপক সমালোচনা করেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে এ বিষয়ে খুব একটা পরিবর্তন না এনেই প্রস্তাবিত বাজেট পাস হয়েছে।

নতুন অর্থবছরের বাজেট পাসের পরপরই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্সের টানা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। যদিও লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এক পর্যায়ে পৌনে ১২টার দিকে ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেন শেষে সূচকটি আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪২১ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্য সূচক পতনের পাশাপাশি এদিন বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১২২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৫টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টির।

এদিকে মূল্য সূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে ৪৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫১৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের ১৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি।

এ ছাড়া বাজারটিতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিঙ্গার বাংলাদেশ, ন্যাশনাল পলিমার, রানার অটোমোবাইল, বিবিএস কেবলস, কাট্টালি টেক্সটাইল, জিনেক্স ইনফোসিস এবং মুন্নু সিরামিক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৬৩৪ পয়েন্টে। বাজারটিতে হাত বদল হওয়া ২৬৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৬টির, কমেছে ১২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির দর। লেনদেন হয়েছে ১১২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।